ফুলকপি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং বিভিন্ন জাতের ফুলকপি চাষের নিয়মাবলী - M.A IT FIRM

ফুলকপি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং বিভিন্ন জাতের ফুলকপি চাষের নিয়মাবলী

 ফুলকপি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং বিভিন্ন জাতের ফুলকপি চাষের নিয়মাবলী

ফুলকপি আমাদের সকলের প্রিয় একটি খাবার বা সবজি, যদিও ফুলকপি শীতকালীন সবজি তবে বর্তমানে এটি সারা বছরই পাওয়া যায়। তবে শীতকালে এর ব্যাপক উৎপাদন ও চাহিদা থাকে এবং দাম সবার নিয়ন্ত্রণের থাকে। কিন্তু এছাড়া বাকি অন্য সময় ফুলকপি পরিমাণ না থাকায় এটার মূল্য বৃদ্ধি পায়। যদিও শীতকালীন সবজি হিসেবে ফুলকপি উৎপাদন হয় তবে এর স্বাদ ও গুণগত মানের দিক দিয়ে এই সবজিটি শীতকালে পূর্ণাঙ্গ পায়। 


ফুলকপি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং বিভিন্ন জাতের ফুলকপি চাষের নিয়মাবলী

বাকি অন্য সময় এই সবজির চাহিদা থাকলেও এর স্বাদ ও পুষ্টিগুণ সঠিক থাকে না। বাজারে বিভিন্ন জাতের ফুলকপি দেখা যায়। তবে সব ফুলকপি শীতকালীন সবজি হিসেবেই বাজারে বাজারজাত হয়। শীতকালীন এই সবজিটি আমাদের সকলেরই প্রিয় একটি সবজি তালিকায় রয়েছে। এবং এর ব্যাপক পুষ্টিগুণ রয়েছে ফুলকপিতে।

পোস্ট সূচিপত্র: ফুলকপি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং বিভিন্ন জাতের ফুলকপি চাষের নিয়মাবলী

ভূমিকা

ফুলকপি একটি সবুজ সবজি, এই শব্দটি আমাদের সকলেরই প্রিয় একটি খাবারের তালিকায় রয়েছে। ফুলকপি যদিও শীতকালীন সবজি তবুও বর্তমানে এটি বারোমাসি পাওয়া যায়। বর্তমানে কৃষিবিদের উন্নতির ফলে এবং প্রযুক্তির উন্নতির হওয়ার কারণে এই সবজিটির বীজ বারোমাসি রোপণ করা যায় এবং বারো মাস এই সবজি পাওয়া যায়। এই সবজি কয়েকটি ধরনের হয়ে থাকে যেমন সাদা ও রঙিন কালারের তবে সাদা থেকে রঙিন সবজিটি পুষ্টিগুণ বেশি রয়েছে বলে গবেষকরা জানিয়েছেন।

 ফুলকপি আমরা নানাভাবে খেয়ে থাকি যেমন ভাজি সবজি হিসেবে ঝোলের তরকারি ইত্যাদি। নিত্য প্রয়োজনীয় খাবারের তালিকায় ফুলকপি রাখা যায়। যদিও এটি ১২ মাস পাওয়া যায় তবে এর পুষ্টিগুণ বারমাস সমান থাকে না কেননা ফুলকপি একটি শীতকালীন সবজি তাই শীতকালেই এর সঠিক পুষ্টিগুণ ও এর পূর্ণাঙ্গ রূপ দেখা যায়। ফুলকপি চাষের জন্য উর্বর্ম জমির প্রয়োজন হয় যেমন মাঠের জমি, বা বিলের জমি যেখানে প্রয়োজনমতো পানি সরবরাহ করা যায় এবং পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকে এমন জাতীয় জমিতে ফুলকপি চাষ করা হয়।

আরো পড়ুন: ১০টি পুষ্টিগুণ খাবার যা আমাদের শরীরের নিত্য প্রয়োজনীয়

ফুলকপির উপকারিতা এবং এর পুষ্টিগুণ কি

ফুলকপির উপকারিতা এবং এর পুষ্টিগুণ কি

ফুলকপিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে এবং ভিটামিন বি ৬ এর উৎপত্তি দেখা যায় ফুলকপিতে। এছাড়াও ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম ফসফরাস ভিটামিন কে ফাইবার প্রোটিন ম্যাঙ্গানিজ পাওয়া যায়। ফুলকপিতে থাকা ভিটামিন বি মস্তিষ্কের ডেভেলপমেন্টের কাজ করে থাকে এবং মস্তিষ্ক উন্নত সাধন করতে ফুলকপির ভূমিকা অপরিহার্য। 

এই সবজিটির আরেকটি গুণ রয়েছে তা হল ফুলকপিতে রয়েছে কোলাইন, এটি একটি ভিটামিন বি যা মস্তিষ্ক উন্নতি সাধন করতে কাজ করে থাকে গর্ব অবস্থায় যদি ফুলকপি নিয়মিত খাওয়া যায় তবে গর্ভের সন্তানের মস্তিষ্ক উন্নতি সাধন হওয়া এবং তার ব্রেন বুদ্ধি সদস থাকা এছাড়াও সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী হয়ে জনগণ করার সম্ভাবনা রয়েছে। ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার যা খাবার হজমে সাহায্য করে।

 ফুলকপি অবশ্যই একটি সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর সবজি যা আমরা নিয়মিত এটা খেতে পারি ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা আমাদের শরীরে রক্ত বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং রক্তের উৎপাদন ক্ষমতা তৈরি করে। ফুলকপিতেথাকা আয়রন বা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের দুর্বলতা কমায় অতিরিক্ত পরিশ্রম করার পরে বা যারা নিয়মিত পরিশ্রম করেন , তারা নিয়মিত ফুলকপি খেলে তাদের দুর্বলতা কাটাতে পারে। ফুলকপির আরো বহুৎ পুষ্টিগুণ রয়েছে যেমন

ওজন কমাতে: ওজন কমাতে ফুলকপির ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে নিয়মিত ফুলকপি খাওয়াতে আপনার শরীরের ওজন কমার সম্ভাবনা রয়েছে কেননা ফুলকপিতে রয়েছে ভিটামিন সি বা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যেটা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।

কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ: ফুলকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের শরীরের খারাপ কলেস্টরল নষ্ট করে এবং আমাদের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখতে সাহায্য করে।

দাঁত ও মাড়ির জন্য: ফুলকপিতে থাকা ক্যালসিয়াম ফ্লোরাইড দাঁত ও মাড়ি িশক্ত করতে সাহায্য করে নিয়মিত ফুলকপি খেলে ক্যালসিয়াম ও ক্লোরাইড এর মাত্রা সঠিক নিয়ন্ত্রণে থাকায় দাঁত ও এবং মাড়ি শক্ত হয়।

ক্যান্সারের ঝুকি কমায়: শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্য যে ফুলকপি তে থাকা সালফোরাপেন ক্যান্সারের কোষ কে মেরে ফেলার ফলে টিউমার বাড়তে পারে না অনেক সময় স্তন ক্যান্সার এবং অন্যান্য ক্যান্সারের জীবাণু নষ্ট করে ফেলে আমাদের সুস্থ শরীর রাখতে সাহায্য করে।

আরো পড়ুন: কমলা লেবু খাওয়ার উপকারিতা কি

ফুলকপি কোন কোন জাতের হয় ও কি কি

ফুলকপি কোন কোন জাতের হয় ও কি কি


ফুলকপির বিভিন্ন রূপকারের জাত রয়েছে এবং এসব জাত ভেদে এক এক রকম ফুলকপি এক এক জাতির হয়ে থাকে। এ সকল ফুলকপি জাত ভেদে আলাদা আলাদা হয় ফুলকপি সাধারণত তিনটি জাত রয়েছে।

আগাম জাত: সুপার স্নোবল, ট্রাফিক্যাল স্নো৫৫, সামার ডায়মন্ড এফ ১, হিট মাস্টার এবং হাইব্রিড জাত এসকল জাতের ফুলকপি গুলো শ্রাবণ ও ভাদ্র মাসে বুনতে হয়। এবং এ সকল ফুলকপি গুলো সেই সময় যথেষ্ট উৎপাদন বৃদ্ধি হয়।

মধ্যম আগাম জাত: পৌষালী, স্নোবল ওয়াই, হোয়াইট টপ, বিগ টপ, মোনালিসা, এবং বিগ শট এ সকল জাতির ফুলকপি গুলো মধ্যম আগাম জাত এর তালিকায় পড়ে। এ সকল জাতির ফুলকপি গুলো সাধারণত ভদ্র ও আশ্বিন মাস এ সকল ফুলকপি বীজ রোপনের সঠিক সময়।

নাবি জাত:মাঘী বেনারসি, হোয়াইট মাইনটেন, ইউনিক স্নোবল, এরফাট ও হাইব্রিড জাতের ফুলকপি এই জাতগুলোকে নাবিজাত বলা হয়। এ সকল জাতের ফুলকপি বীজ রোপন করার সঠিক সময় আশ্বিন এবং কার্তিক মাস এই সময় এই বীজ রোপন করলে সঠিক চারা উৎপাদন হয় এবং এতে ভালো ফলন পাওয়া যায়

ফুলকপির বিভিন্ন রকমের জাত রয়েছে, যে সকল জাত বা প্রজাতের ফুলকপি গুলো আমরা প্রতিবছর চাষ করে থাকি এবং এ সকল ফুলকপি চাষে ভালো উৎপাদন হয়। তাই এ সকল ফুলকপির জাতকে প্রথম তালিকায় রাখা হয়েছে। 

শীতকালীন ফুলকপি চাষ পদ্ধতি ও নিয়মাবলী

শীতকালীন ফুলকপি চাষ পদ্ধতি ও নিয়মাবলী


ফুলকপি একটি শীতকালীন সবজি তবে বর্তমানে এটি বারোমাসি পাওয়া যায় তবুও এটিকে শীতকালীন সবজি হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। এ কারণে ফুলকপি চাষের কিছু সঠিক নিয়মাবলী রয়েছে যেসব নিয়মাবলী অনুযায়ী যদি ফুলকপি চাষাবাদ করা যায় তবে অবশ্যই কৃষকের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

অনেক সময় ভুল সিদ্ধান্ত এবং চাষাবাদের নিয়মাবলী না জানায় কৃষকের ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয়। এজন্য সঠিক নিয়মাবলী ফুলকপির চাষাবাদ করা উচিত। আমরা জানবো ফুলকপি চাষের সঠিক নিয়মাবলী। ফুলকপি চাষের জন্য প্রথমে আগে একটি বীজতলা তৈরি করতে হবে, যেই সময় ফুলকপির বীজতলা তৈরি করব বা বীজ রোপণ করব সেই মাস অনুযায়ী বা ওই সিজন অনুযায়ী যেই সকল বীজ রোপন করা যায় সেই সকল ফুলকপির বীজ সংগ্রহ করতে হবে তারপরে একটি সঠিক বীজতলা তৈরি করতে হবে যেখানে বীজ রোপন করতে হবে।

 এবং ফুলকপির বীজতলায় চারা গজানোর১০ থেকে ১২ দিন পর চারা উঠিয়ে দ্বিতীয় বীজতলায় রোপন করতে হয়। চারার বয়স যখন ৩০ দিন হয় বা তার চাইতে দুই এক দিন বেশি তখন সেই চারা গুলো দ্বিতীয় পিস্তলা থেকে উত্তোলন করে সরাসরি জমিতে চাষাবাদ এর উপযোগী হয়। সরাসরি জমিতে চাষাবাদের জন্য প্রথমে জমি নির্বাচন করতে হবে এবং সেই জমি  চাষ করে নিতে হবে এবং শাড়ি বদ্ধ ভাবে চারারোপনের ব্যবস্থা করতে হবে। 

জন্য একটি শাড়ি থেকে আরেকটি শাড়ির দূরত্ব পায় দুই ফিট থাকতে হবে এবং প্রতিটি চারা থেকে প্রতিটি চারার দূরত্ব বা 18 ইঞ্চি খাটতে হবে এই নিয়মে ফুলকপির চারা রোপন করতে হবে। এবং সারিবদ্ধভাবে চারা রোপনের পরে দুই সারির মাঝখান থেকে মাটি তুলে গাছের গোড়া দিয়ে দিয়ে দিতে হবে এবং সঠিকভাবে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা রাখতে হবে। নির্বাচন করা উচিত যেখানে সঠিক সময়ে পানি সরবরাহ করা যায় এবং অতিরিক্ত পানি হলে নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকে ফুলকপি চাষ করা যায়।

আরো পড়ুন: পুইশাক এর উপকারিতা এবং  চাষাবাদের নিয়মাবলি

উপসংহার

ফুলকপি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং বিভিন্ন জাতের ফুলকপি চাষের নিয়মাবলী


উপরোক্ত বিষয় থেকে আমরা জানলাম কিভাবে ফুলকপি চাষাবাদ করা যায় এবং ফুলকপির প্রয়োজনীয়তা গুরুত্ব এবং এর বীজতলা তৈরি ছাড়াও ফুলকপির রোপনের সঠিক সময়। কেননা আমরা ফুলকপি আমাদের একটি প্রিয় সবজি হিসেবে তালিকায় রয়েছে। আমরা চাইলেই 12 মাস এই সবজি খেতে পারি বা পেয়ে থাকি। 

সেও তো এই সবজির উপকারিতা এবং অপকারিতা বিষয়ে আমাদের তথ্য জানা উচিত। প্রয়োজনীয় সবকিছু বিবেচনা করে দেখা যায় ফুলকপির ফাটা ভিটামিন প্রোটিন ক্যালসিয়াম আমাদের শরীরের নানারকম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন রোগের প্রতিশোধক হিসেবেও কাজ করছে। এছাড়াও ফুলকপি আমাদের একটি সুস্বাদু সবজি বা খাবার হিসেবে রয়েছে যা আমরা নানারকম খাবারের সঙ্গেও খেতে পারি যেমন নুরুল পাস্তা ভাজি ঢোল ইত্যাদি খাবার আমরা ফুলকপি দিয়ে তৈরি করতে পারি।

No comments:

Post a Comment