ব্যবসায় মূলধন ব্যয়ের ধারণা ও খরচের উৎস মূল্যায়ন
একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব মূলধন ব্যয় থাকে। মূলধন ব্যয় বলতে বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহিত তহবিল ব্যয় বুঝায়। সাধারণত তহবিলের যোগানদাতাদের প্রত্যাশিত আয় প্রতিষ্ঠানের জন্য মূলধন ব্যয় হিসেবে গণ্য হয়। ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন উচ্চ থেকে প্রয়োজনীয় তহবিল সংস্থান করে।
তহবিলের বিভিন্ন উচ্ছের মূলধন ব্যয় সমান হয় না। ফলে প্রতিটি উচ্ছের পৃথকভাবে মূলধন ব্যয় নির্ণয়ের প্রয়োজন হয়। মূলধন ব্যয় মূলধন ব্যয় নির্ণয়ের গুরুত্ব তহবিলের বিভিন্ন উচ্ছের মূলধন ব্যয় নির্ণয় এবং অন্যান্য আরো অনেক বিষয়বস্তু রয়েছে।
পেজ সূচিপত্র: ব্যবসায় মূলধন ব্যয়ের ধারণা ও খরচের উৎস মূল্যায়ন
- ভূমিকা
- ব্যবসায় মূলধন ব্যয় নির্ণয়ের তাৎপর্য
- মূলধন ব্যয় নির্ণয় করার প্রক্রিয়া
- ব্যবসায় ঋণ মূলধন বিনিয়োগ ব্যয়
- ব্যবসায় সংরক্ষিত মূলধন আয়ের ব্যয়
- শূন্য লাভাংশ বৃদ্ধি করার পদ্ধতি
- উপসংহার
ভূমিকা
বড় বড় প্রতিষ্ঠান তাদের বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজনীয় তহবিল এক বা একাধিক উৎস থেকে সংস্থান করে। এক্ষেত্রে সবগুলো উচ্চের মূলধন খরচের গড় হাড় উক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য প্রযোজ্য মূলধন খরচ হিসেবে বিবেচিত হয়। কোন একটি কোম্পানির বিনিয়োগের জন্য ১০ লক্ষ টাকা প্রয়োজন এই ১০ লক্ষ টাকার মধ্যে ৫ লক্ষ টাকা শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে এবং ৫ লক্ষ টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।
শেয়ার মালিকরা তাদের বিনিয়োগ থেকে 18% আয় প্রত্যাশা করে এবং ব্যাংক প্রতিষ্ঠানকে ১২% সুদের হারে ঋণ দিতে সম্মত হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানের জন্য শেয়ার বিক্রি উৎসের মূলধন খরচ হবে ১৮% এবং ব্যাংক ঋণ উৎসের মূলধন খরচ হবে ১২%। দুটি উচ্চের মূলধন খরচকে গড়ে করলে হারটি হয় ১৫% প্রতিষ্ঠানের জন্য গড় মূলধন খরচ হিসেবে পরিনিত হবে।
এখানে হিসেব রাখতে হবে যেহেতু প্রতিষ্ঠানটির মূলধন খরচ ১৫% প্রতিষ্ঠানটিকে তার বিনিয়োগ থেকে তহবিল খরচ হিসাব ভুক্ত করার পূর্বে নূন্যতম ১৫ পারসেন্ট আয় অর্জন করতে হবে, নতুবা প্রতিষ্ঠানটি শেয়ার মালিকদের প্রত্যাশিত আয় এবং ব্যাংকের প্রত্যাশিত আয় মেটাতে পারবে না। অতএব বলা যায় বিভিন্ন উৎস থেকে সংগ্রহীত তহবিলের মালিকদের প্রত্যাশিত আয় মেটাতে প্রতিষ্ঠানকে তার বিনিয়োগের উপর সর্বনিম্ন যে হারে আয় প্রয়োজন সেই হারকে তহবিল খরচ বলা হয়।
ব্যবসায় মূলধন ব্যয় নির্ণয়ের তাৎপর্য
প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে মূলধন খরচ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে অর্থায়নে সঠিক উচ্চ বেঁচে নেওয়া থেকে শুরু করে বিনিয়োগ সুযোগ বা প্রকল্পের মূল্যায়ন পর্যন্ত সব ক্ষেত্রে মূলধন খরচ প্রয়োগ করা হয়। যেমন বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত সংক্রান্ত একটি প্রতিষ্ঠান সোনালী ব্যাংক থেকে 18% সুদের হারে ৫০ লক্ষ টাকার ঋণ নিয়ে একটি কারখানা দেয়।
কারখানাটি চালু করার পর দেখা গেল কারবারটি ১০% হারে আয় করতে পারতে বা সোনালী ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ আঠারো পার্সেন্ট সুদের হার থেকে কম। ফলে প্রতিষ্ঠানটি সোনালী ব্যাংকের টাকা পরিশোধ করতে পারবে না। এমত অবস্থায় কারবারটি ব্যর্থ হবে। সুতরাং তহবিল খরচ জেনে তা অপেক্ষা বেশি আয় করা সম্ভব এমন বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত নেওয়া আবশ্যক। অতএব বলা যায় ,সঠিক তহবিলের খরচ নির্ণয় সঠিক বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্ব শর্ত হিসেবে বিবেচিত হয়। মূলধন কাঠামো সংক্রান্ত প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের একটি কাম্য ঋণ নীতি থাকে। কাম্য ঋণ নীতি বলতে প্রতিষ্ঠার মোট মূলধন কত অংশ ধার বা ঋণ থেকে সংগ্রহ করা হয় তাকে বুঝায়।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে মালিকদের ইস্যুইটি অংশকেই মোট মূলধন বলে। একটি প্রতিষ্ঠান তার মোট মূলধনের ৫০% নিজস্ব মূলধন বা ইকুইটি এবং ৫০% ঋণ অথবা ৬০% নিজস্ব মূলধন বা ইকুইটি এবং ৪০% ঋণ অথবা ৪০% নিজস্ব মূলধন এবং ৬০% ঋণ, এরুপ যে কোন অনুপাতে সংগ্রহ করতে পারে। প্রতিষ্ঠানকে এরূপ প্রতিটি অনুপাত এর মূলধন কাঠামোর খরচ নির্ণয় করতে হয় এবং যে বিকল্প অনুপাতে মূলধন খরচ সর্বনিম্ন হয়, সে মূলধন কাঠামো গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। অতএব কারবারের সঠিক মূলধন কাঠামো নির্বাচন করার ক্ষেত্রেও মূলধন ব্যয় তাৎপর্য বহন করে।
মূলধন ব্যয় নির্ণয় করার প্রক্রিয়া
ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান তাদের দীর্ঘ মেয়াদী বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি তহবিলের উচ্চ থেকে সংগ্রহ করে। এসব দীর্ঘমেয়াদি তহবিলের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী ঋণ মূলধন অগ্রাধিকার শেয়ার মূলধন সাধারণ শেয়ার মূলধন এবং সংরক্ষিত আয় অন্যতম। একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ সুযোগ বা প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ এর চারটি উচ্ছের মধ্য থেকে সংগ্রহ করে। এরূপ প্রতিটি উচ্চ থেকে অর্থ সরবরাহকারী বা বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশিত আয় এবং ঝুঁকির ধরনের ভিন্নতা থাকে।
ঋণ মূলধন সরবরাহকারীদের প্রত্যাশিত আয় এবং সাধারণ শেয়ার মালিকদের প্রত্যাশিত আয়ের সমান হয় না। যেহেতু বিনিয়োগকারী বা অর্থ সরবরাহকারীদের প্রত্যাশিত আয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মূলধন খরচ হিসেবে গণ্য হয়, সেহুতু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নের বিভিন্ন উচ্ছে মূলধন খরচের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। মূলধন খরচের এই ভিন্নতা অর্থ বিনিয়োগকারী বা সরবরাহকারীদের প্রত্যাশিত আয়ের হারের ভিন্নতা এবং ঝুক্তির ধরনের ভিন্ন তাকে নির্দেশ করে। সাধারণত অর্থ সরবরাহকারীরা তাদের বিনিয়োগকে যত বেশি ঝুঁকিপূর্ণ মনে করবে, তাদের প্রত্যাশিত আয়ের হার ততো বেশি হবে।
ব্যবসায় ঋণ মূলধন বিনিয়োগ ব্যয়
প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান সাধারণত এক বা একাধিক উচ্চ থেকে ব্যবসায়ের জন্য ঋণ সংগ্রহ করে থাকে। যেমন ছোট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান মুদির দোকান চুল কাটার সেলুন ওষুধের দোকান ইত্যাদি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের ঋণ মূলধনের প্রধান উৎস হচ্ছে বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পাত্ত ঋণ। আবার বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণের পাশাপাশি বন্ড বা ঋণপত্র বিক্রির মাধ্যমে অর্থ সংস্থান করে থাকে। বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে মূলধনের সংস্থান করলে ঋণ মূলধন ব্যয় নির্ণয় খুব সহজ। এক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃক ধার্যকৃত সুদের হার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের জন্য মূলধন ব্যয় হিসেবে পরিগণিত হয়।
যেমন সোনালী ব্যাংক মুদির দোকানে গিয়ে ১০ লক্ষ টাকা ১৫% হার সুদে ঋণ দিতে সম্মত হয়। এক্ষেত্রে মুদির দোকানের ঋণ মূলধন ব্যয় হবে ১৫ শতাংশ। তবে এই হার প্রতিষ্ঠান জন্য কর পূর্ব মূলধন ব্যয় হিসেবে পরিগণিত হয়। উল্লেখ্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাধারণত ঋণ মূলধন বাবদ যে পরিমাণ সুদ পরিশোধ করে, তা পর পূর্ব মুনাফা থেকে বাদ দিয়ে প্রতিষ্ঠানের কর যোগ্য মুনাফা নির্ধারণ করা হয়। ফলে কোম্পানিতে কম করে দিতে হয় তাই ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহীত ঋণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য সুবিধা নিয়ে আসে। সমন্বয় করার প্রয়োজন হয়।
ব্যবসায় সংরক্ষিত মূলধন আয়ের ব্যয়
কোম্পানির অর্থায়নে অন্যতম একটি উৎস হচ্ছে সংরক্ষিত আয়। কোম্পানি প্রতিবছর যে
পরিমাণ টাকা মুনাফা হিসেবে অর্জন করে, সেটির পুরোটা সে আর মালিকদের মধ্যে লামাংস
হিসেবে বন্টন না করে কিছু অংশ প্রতিষ্ঠান রেখে দেয়।
উদাহরণস্বরূপ: একটি কোম্পানি কোন বছরে 50 লক্ষ টাকা মুনাফা করলে এবং উক্ত মুনাফা থেকে ২৫ লক্ষ টাকা ব্যবসায় রেখে দিলে ২৫ লক্ষ টাকা ব্যবসা সংরক্ষিত আই হিসেবে গণ্য হবে। এভাবে সংরক্ষিত আয় থেকে পরবর্তী বিভিন্ন বিনিয়োগ সুযোগ বা প্রকল্প বাস্তবায়নে অর্থায়নে ব্যবস্থা করা হয়। সংরক্ষিত আয় থেকে অর্থায়ন করা হয় বলে অনেকের কাছে মনে হতে পারে যে সংরক্ষিত আ এর কোন ব্যয় নেই। কিন্তু এই ধারণাটা ভুল কারণ এই সংরক্ষিত আ এর অপদৃষ্টিতে বাইক্য কোন ব্যয় না থাকলেও এর একটি সুযোগ ব্যয় রয়েছে।
সংরক্ষিত আয়ের সুযোগ ব্যয় বুঝার আগে সুযোগ ব্যয়ের সাধারণ ধারণা বুঝা দরকার। মনে করো তোমার বাবার কোন একটি ব্যাংকে ১০ লক্ষ টাকা জমা আছে তোমার ভাইয়া তোমার বাবাকে একদিন বলল বাবা তোমার একাউন্টে যে ১০ লক্ষ টাকা পড়ে আছে সেটা আমাকে দাও আমি ব্যবসা করব। তোমার ভাইয়ের এ কথাটি ঠিক নয় কারণ টাকাটা আসলেই অলসপুরে নেই ব্যাংক এই 10 লক্ষ টাকার ওপর একটি নির্দিষ্ট হারে সুদ প্রদান করবে। ফলে তোমার বাবা যদি তোমার ভাইয়াকে টাকাটা দিয়ে দেন তাহলে সুদ বাবদ যে আয় হতো সেটা পাবেন না ফলে সুদ বাবদায় না পাওয়াটা তোমার ভাইয়াকে ব্যবসার কাজে টাকা দেওয়ার একটি সুযোগ দেয়।
এরূপ ভাবে কোম্পানির আয়শিয়ার মালিকদের মধ্যে বন্টন না করে রেখে দিলে
শেয়ার মালিকদের দৃষ্টিকোণ থেকে এর একটি সুযোগ ব্যয় থাকে। কোম্পানির অর্জিত
মুনাফা কোম্পানিতে সংরক্ষিত আই হিসেবে না রেখে শেয়ার মালিকদের মধ্যে বন্টন করলে
শেয়ার মালিকরা সেই অর্থ অন্যান্য বিনিয়োগ করে অতিরিক্ত আয় করতে
পারতো। ফলে কোম্পানির অর্জিত মুনাফা বা আয় বন্টন না করলে শেয়ার মালিকরা
উক্ত অর্থের অনত্র বিনিয়োগপ্রাপ্ত আয় থেকে বঞ্চিত হয়। এখানে অর্থ বিনিয়োগ
প্রাপ্ত আয় থেকে বঞ্চিত হওয়াটাকে সংরক্ষিত আয়ের সুযোগ ব্যয় হিসেবে আখ্যায়িত
করা হয়।
শূন্য লাভাংশ বৃদ্ধি করার পদ্ধতি
একটি সাধারণ শেয়ার মূলধন ব্যয় নির্ণয়ের একটি সহজ পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে মনে করা
হয় কোম্পানি বর্তমান বছরের যে লাভাংশ দিয়েছে ভবিষ্যৎ বছরগুলোতে সমপরিমাণ লাভাংশ
ঘোষণা করবে। অর্থাৎ শেয়ার মালিকদের প্রত্যাশিত লভ্যাংশেরে কোন পরিবর্তন হবে
না। উদাহরণস্বরূপ একটি কোম্পানি এ বছর অতি শেয়ারে দশ টাকা লাভাংশ দিলে আগামী
বছরগুলোও কোম্পানির শেয়ারের মালিকদের ১০ টাকা করে লাভাংশ দেবে বলে অনুমান করা
যায়। এই পদ্ধতিতে প্রতিটি শেয়ারে শেয়ারের বর্তমান বাজার মূল্য দিয়ে ভাগ করলে
সাধারণ শেয়ারের মূলধন পাওয়া যায়।
উপসংহার
আমরা যদি কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করতে যাই সে ক্ষেত্রে আমাদের মূলধন ব্যয় ধারণা ও খরচের উৎস মূল্যায়ন করতে হবে। উপরোক্ত বিষয়গুলো থেকে মূলধন ব্যয় ধারণা ও খরচের উৎস সম্পর্কে আমরা মোটামুটি একটি ধারণা পেয়েছি। তবে মূলধন ব্যয়ের ধারণা ও খরচের উৎস একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করার ক্ষেত্রে অথবা সেই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার পূর্বে মূলধন ব্যয় ধারণা এবং খরচের উৎস মূল্যায়ন করা বাঞ্ছনীয়।
ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করার ক্ষেত্রে মূলধন ব্যয় ধারণা রাখতে হবে এবং এই ধারণা ও খরচের মূল উৎস কোথা থেকে আসছে বা কি পরিমান হারে সুদ প্রদান করা হচ্ছে এবং বাৎসরিক হিসাব শেষে সুদের পরিমাণ মিটিয়ে মুনাফা অর্জন করা যাবে কিনা এ ব্যাপারেও মূলধন ব্যয়ের ধারণা যদি ভুল হয় তাহলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে
No comments:
Post a Comment