সিফিলিস রোগের লক্ষণ কি কি ও প্রতিকার
সিফিলিস রোগকে বাংলায় ফিরিঙ্গি বা গর্মী রোগ বলা হয় এটা পেলিডাম দ্বারা তৈরি একটি যৌনবাহিত রোগ। সংক্রমনের প্রথম ধাপ যৌন স্পর্শ, রক্ত সঞ্চালন করা, চুম্বন এবং মায়ের গর্ভ থেকে ভ্রুনের মাধ্যমে সংক্রমিত হতে পারে। সিফিলিসের লক্ষণ এবং উপসর্গের পর্যায়ক্রমে চারটি ধাপে ভাগ করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে এটি একটি যৌন ব্যাধি জনিত কত কোন প্রকার যন্ত্রণা বিহীন চুলকানিহীন চামড়ার একটি ক্ষত।
দ্বিতীয়
পর্যায়ে সিফিলিসের সামান্য ফুসকুড়ি এটা হাতে বিভিন্ন জায়গায় এবং পায়ের তালুতে
হয়ে থাকে যার কোন লক্ষণ বোঝা যায় না। তৃতীয় পর্যায়ে সিফিলিসে গুমাস, স্নায়বিক
হৃদপিণ্ড গঠিত বিভিন্ন জায়গায় এর উপসর্গ দেখা যেতে পারে। চতুর্থ পর্যায়ে এর ঘন
ঘন এপিটিকেল প্রদর্শনমান হওয়ার কারণে বিশেষ অনুকরক হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।
এটি প্রথমে শরীরে আলসারের মতন ঘা সৃষ্টি করে এবং গুটি গুটি ব্রনের মতন তৈরি হয়
এবং পরবর্তীতে এগুলো আরো বড় হতে থাকে এবং নানান রকম আকার সৃষ্টি করতে পারে কোন
কোন সিফিলিস দেখা গেছে প্রায় একটা এক সেন্টিমিটার এর মতন। এই রোগটি সাধারণত
পুরুষ এবং মহিলাদের যৌনাঙ্গে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কারো কারো ঠোঁটে বা
জিহবা বা গলার ভেতরে এটা দেখা দেয়, অনেক ক্ষেত্রে হাতের আঙ্গুলে এর
ব্যাকটেরিয়ার উপাদান পাওয়া যায় এরকম পরিস্থিতি দেখলে বুঝতে হবে যে এটা
সিপিলিসের প্রথম লক্ষণ।
প্রাথমিক পর্যায়ে সিফিলিসের জন্মকাল ১৪ থেকে ২১ দিন মলদ্বার ও শরীরের যে কোন অংশে ব্যথা বিহীন ঘা এর সৃষ্টি হয় এবং চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে এমনিতেই ঠিক হয়ে যায়। এবং পরবর্তীতে শরীরে এটি প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়ার উৎপত্তি করে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের আগ পর্যন্ত সামান্য কিছু উপসর্গ দেখা যায় ।প্রাথমিক সিফিলিসের চার থেকে আট সপ্তাহ পর থেকে দেখা যায় মাধ্যমিক সিফিলিসের উপসর্গ সমূহ।এ পর্যায়ে সিফিলিসের লক্ষণসমূহ হলো
হাতে মুখের ভেতরে যৌনাঙ্গে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া। এবং পানি ভর্তি ফুসকার মতন দেখা যায় এগুলো।
শরীরে অসুস্থতা দেখা দিবে হালকা জ্বর ও শরীর ব্যথা অনুভব করবে সেই সাথে কিছুটা মাথাব্যথা থাকবে
পোস্ট সূচীপত্র: সিফিলিস রোগের লক্ষণ কি কি ও প্রতিকার
- ভূমিকা
- কীভাবে বুঝবেন সিফিলিস হয়েছে? জানুন প্রতিকারের উপায়
- সারা বিশ্বে যৌন রোগ সিফিলিস কেন বাড়ছে
- সিফিলিস থেকে মুক্তির উপায় – লক্ষণ ও চিকিৎসা
- উপসংহার
ভূমিকা
রোগ যেমনই হোক সেটা হোক ছোট বা কিংবা বড় কিছু কিছু রোগ অল্পতেই অনেক বড় ধরনের
ক্ষতি তৈরি করে ফেলতে পারে আবার অনেক বড় রোগও সামান্য ক্ষতির কারণ হতে পারে
এজন্য আমাদের সবসময় সচেতন থাকতে হবে। সামাজিকতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে আমরা অনেক
সময় অনেক রোগ গোপন রেখে চিকিৎসা নেই না।
এটা সবচাইতে বড় ভুল ২১ শত প্রয়োজনে
মানুষ এরকম সামাজিক ভ্রান্ত ধারণার মধ্যে থাকা নেহাত বোকামি ছাড়া আর কিছুই নয়।
বর্তমানে প্রায় সব ধরনের রোগের ঔষধ আবিষ্কৃত হয়েছে এজন্য রোগ ধরা পড়া মাত্রই
বা বোঝা মাত্রই সেই রোগের সুষ্ঠু চিকিৎসা নেওয়া উচিত। সিফিলিস রোগ মানুষের শরীরে
ধীরে ধীরে কাজ করে এবং একপর্যায়ে মানুষকে মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যায় এজন্য
সমাজের ভ্রান্ত ধারণা দূর করে এই রোগের সঠিক চিকিৎসা করা উচিত।
আরো পড়ুন: কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কীভাবে বুঝবেন সিফিলিস হয়েছে? জানুন প্রতিকারের উপায়
এ বিষয়ে জার্মানের যৌন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ
নোরবাট ব্রকমেয়ের বলেন অনেকেই এটাকে প্রাথমিক পর্যায়ে আলসার মনে করেন সাধারণত
আলসার তিন সপ্তাহ পর একাই সেরে যায় এবং এর কোন চিকিৎসা গ্রহণ করেন না। কিন্তু
তখন এই রোগটি সারা শরীরে ছড়িয়ে যায় কোনটি লাল কোনটি গোলাপী এবং কিছু কিছু
ফোসকা পুরা ফোসকার মতন হয়ে ওঠে। চুল এই ফোসকা গুলো শরীরে কোন চুলকানি সৃষ্টি করে
না এটা রোগের দ্বিতীয় লক্ষণ ।তৃতীয় পর্যায়ে এসে সিফিলিস শরীরের অন্যান্য অংশকে
আক্রান্ত করে যেমন হাড় শ্বাসতন্ত্র মাংসপেশী এবং শরীরের মূল অংশ এবং সবচেয়ে
ভয়াবহ হলো যখন আট্রারিকে আক্রান্ত করে।
এবং এর ফলে মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে ।
চতুর্থ পর্যায়ে এসেছি এই রোগ শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে যায় এবং এটা যকৃত ও
লিভারের ক্ষতি করে বা লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে দেয়। একপর্যায়ে এসে এই রোগী
তার দেহে বিভিন্ন স্থানে কত সৃষ্টি হয় এবং তার মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করে না,
সিফিলিস এর কারণে স্নায়ু কোষ দুর্বল হয়ে যায় ও দৃষ্টিশক্তি কমে যায়। এ রোগের
প্রতিকার হিসেবে এখনো কোন সঠিক ওষুধ বের হয়নি তবে ব্যক্তিগতভাবে সচেতন হওয়া এই
রোগীর প্রধান ওষুধ বলে বিবেচনা করা হয়েছে সচেতন ব্যক্তি এই রোগ থেকে মুক্ত পেতে
পারে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞরা এর অন্যান্য এন্টিবায়োটিক তৈরির কথা ভাবছেন।
সারা বিশ্বে যৌন রোগ সিফিলিস কেন বাড়ছে
সিফিলিস পৃথিবীর প্রাচীনতম যৌন রোগের মধ্যে একটা। সময় যদিও মনে হয়েছে এই রোগটি একেবারে নিরাময় হয়ে গেছে কিন্তু পরবর্তী দেখা গেছে এ লোক আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।১৪৯০ দশকের দিকে প্রথমবারের মতো গবেষণা করা এবং রেকর্ড করার পর থেকে সিপ্রিস রোগকে কয়েকটি নামে ডাকা হয় যার বেশিরভাগই রয়েছে অপ্রীতিকর ও অপ্রত্যাশিত যেমন ফরাসি রোগ মিয়া পলিটন রোগ ও পলিশ রোগ। পৃথিবীর প্রায় সারা
বিশ্বেই এই রক্তের প্রচলন সৃষ্টি হয়েছে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নাম এবং বিভিন্ন
উপসর্গ নিয়ে এ রোগের বিস্তার ঘটে আসছে এই রোগ বৃদ্ধি পাওয়ার মূলত অনেকগুলো কারণ
রয়েছে তার মধ্যে বিশেষ কিছু কারণ হচ্ছে অসচেতনতা যৌন মিলনে অসচেতনতা রক্ত
সঞ্চালনের মাধ্যমে ভুল রোগ নির্ণয়, এবং এ ধরনের অনেক কারণ রয়েছে সিফিলিসের
বৃদ্ধি পাওয়ার মূলত কারণের মধ্যে যৌন মিলনতা প্রধান কারণ এই কারণের মাধ্যমে পুরো
পরিবারের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং গর্ভাবস্থায় থাকা গর্ভবতী বা তার সন্তান
রয়েছে সিফিলিস রোগের বিস্তার ঘটছে।
ব্রকমেয়ের বলেন, বেশিরভাগ প্রাণঘাতী রোগ নিয়ে সমাজে একটি ট্যাবুর রয়েছে। একাংশ
শতাব্দীতে এসেও এর বাইরে যেতে পারেনি যখন কেউ জানতে পারে যে এটা যৌন মিলনের
ক্ষেত্রে এই রোগের বিস্তার করতে পারে তখন সমাজে একটি ভ্রান্ত ধারণা সৃষ্টি হয়।
সমাজের মানুষ এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে অন্য দৃষ্টিতে চলাফেরা করতে থাকে
এক্ষেত্রে রোগী মানসিকভাবে আরও বেশি সুস্থ হয়ে।
পড়ে এই জন্য এমন অনেক রোগ
রয়েছে যেগুলো মানুষ খোলাখুলি প্রকাশ করতে চায় না নিজের ভিতরেই গোপন রাখে এবং
ধীরে ধীরে এই রোগের রোগী বৃদ্ধি পায় এবং গ্রহ বৃদ্ধি পায়। এ রোগের প্রধান
প্রতিকার হচ্ছে সচেতনতা। আমরা যদি সচেতন থাকি তাহলে এরকম রোগ হতে মুক্ত পাওয়া
সম্ভব। সিফিলিস এর মত অনেক রোগ রয়েছে যে রোগ গুলো যৌন মিলন রক্ত সঞ্চালন
সংস্পর্শী কারণে একজন হতে অন্যজনের হতে পারে। এ ধরনের রোগ ধরা পড়লে অবশ্যই থাকতে
হবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে সিফিলিসের জন্মকাল ১৪ থেকে ২১ দিন মলদ্বার ও শরীরের যে কোন অংশে ব্যথা বিহীন ঘা এর সৃষ্টি হয় এবং চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে এমনিতেই ঠিক হয়ে যায়। এবং পরবর্তীতে শরীরে এটি প্রচুর পরিমাণে ব্যাকটেরিয়ার উৎপত্তি করে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের আগ পর্যন্ত সামান্য কিছু উপসর্গ দেখা যায় ।প্রাথমিক সিফিলিসের চার থেকে আট সপ্তাহ পর থেকে দেখা যায় মাধ্যমিক সিফিলিসের উপসর্গ সমূহ।এ পর্যায়ে সিফিলিসের লক্ষণসমূহ হলো
হাতে মুখের ভেতরে যৌনাঙ্গে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে ফুসকুড়ি দেখা দেওয়া। এবং পানি ভর্তি ফুসকার মতন দেখা যায় এগুলো।
শরীরে অসুস্থতা দেখা দিবে হালকা জ্বর ও শরীর ব্যথা অনুভব করবে সেই সাথে কিছুটা মাথাব্যথা থাকবে
- খাবারে অনীহা সৃষ্টি হয়
- গলা ফুলে যায় ও ব্যথা করে
- মাথায় চুল পড়া ও ভুরু পড়ে যাওয়া শুরু হয়ে যায়
- সিফিলিস কি কোন পর্যায়ে নিরাময় করা যায়
আপনি যদি প্রাথমিক পর্যায়ে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন এবং এর চিকিৎসা গ্রহণ
করেন তাহলে এটি নিরাময় করা সম্ভব কিন্তু যদি দ্বিতীয় পর্যায়ে গিয়ে এর চিকিৎসা
নেন সে ক্ষেত্রে হয়তো বা এটি খুব ক্ষতি নিরাময় করবে এবং আপনার এই রোগ বৃদ্ধি
পাওয়া কমিয়ে দেবে। আপনার হওয়া যে ক্ষতিগুলো আছে বা কতগুলো রয়েছে সেগুলো ধীরে
ধীরে নিরাময় হয়ে যাবে।
কিন্তু যদি আপনি শেষ পর্যায়ে গিয়ে এর চিকিৎসা নেন
সেক্ষেত্রে আপনার বিগত হয়ে যাওয়া ক্ষতি সম্পূরক সম্পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই
কম এবং এই রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে মুক্তি পাওয়ার আর কোন রাস্তা থাকবে না।
এজন্য আমাদের অবশ্যই প্রাথমিক পর্যায়ে থাকা অবস্থায় এর সুস্থ চিকিৎসা গ্রহণ করা
উচিত সে ক্ষেত্রে আমরা এই রোগটিকে দমন করতে পারব।
উপসংহার
সিফিলিস রোগ ও রোগীর যথেষ্ট সচেতনদায়ী পাড়ে এই রোগ থেকে মুক্তি দিতে। তাই
আমাদের প্রত্যেককে সচেতন হতে হবে। সামাজিক কিছু বিষয় নিয়ম নীতি যেগুলো আমরা
নিজেদের ক্ষতির কারণ গড়ে তুলছি। এই রোগ হতে মুক্তি পেতে হলে সঠিক চিকিৎসা এবং
সঠিক সময় গ্রহণ করতে হবে। সেই সাথে সচেতন ও থাকতে হবে তা না হলে এই রোগে দিন দিন
বহির্বিশ্ব মৃত্যু সংখ্যাও বাড়ছে।
এই রোগ শুধু একজন থেকেই সীমাবদ্ধ নয় যেহেতু
রোগটি অনেকটি ছোয়াচে রোগের মত সেজন্য আমাদের এই রোগ হতে সচেতন থাকতে হবে যৌন
মিলন রক্ত সঞ্চালন সহ অন্যান্য যে কার্যক্রম গুলো আছে এগুলো পরিচালনা করার পূর্বে
অবশ্যই আমাদের সচেতন ভাবে কাজগুলো করতে হবে তাহলে আমরা এই রোগের প্রতিকার করতে
পারব।
No comments:
Post a Comment