আখ চাষের প্রয়োজনীয়তা এবং আখের গুড় তৈরি প্রক্রিয়া
আর চাষের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম, আমাদের দেশে বর্তমানে আখ চাষ নেই বললেই চলে
পূর্বের চাইতে বর্তমানে আখের চাষ পরিমাণ খুবই কম যে কারণে আখের গুরু উৎপাদন করা
প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক বন্ধ হয়ে গেছে। সরকারি ভাবে পরিচালিত কিছু প্রতিষ্ঠান চালু
রয়েছে যেগুলো প্রায় বন্ধের পথে।
কেননা পরিপূর্ণ ভাবে আখ উৎপাদন করা এবং আখের চাষ করা পূর্বের থেকে অনেক কম
বা নাই বললেই চলে। আখ আমাদের দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকারী ফসল।
যেটা দিয়ে শুধুমাত্র রস কিংবা গুড় দিয়েই শেষ নয়, আখের রস বের করার পর আখের যে
অংশগুলো থাকে সেগুলো দিয়েও তৈরি হয় কাঠের বিপরীত ব্যবহারিত আসবাবপত্রের উপাদান
যেমন নানা রকম বোর্ড তৈরি হচ্ছে আখের ছোবড়া দিয়ে
পোস্ট সূচিপত্র:আখ চাষের প্রয়োজনীয়তা এবং আখের গুড় তৈরি প্রক্রিয়া
আখ চাষের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম, কেননা আমাদের চিনির প্রয়োজনীয়তা যেমন
নিত্যদিন তেমনি আখের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ এই আখ থেকেই তৈরি হয় চিনি,
তাই আখের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কিন্তু বর্তমানে আখের চাষাবাদ খুবই কম।
নির্দিষ্ট কিছু এলাকাভিত্তিক ভাবে আখের চাষ করা হয়। বিগত দিনে দেশের প্রায়
বিভিন্ন অঞ্চলে আখের চাষ করা হতো কিন্তু বর্তমানে তা হয় না। আখের উৎপাদন কমে
যাওয়ার কারণে বাজারে চিনির মূল্যবৃদ্ধি পেয়েছে কারণ ভোক্তার চাহিদা অনুযায়ী
চিনি উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে না যে কারণে চিনির দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। চিনির দাম
বৃদ্ধি পাওয়ার পেছনে আখ চাষ নির্মূল হওয়ার বিশেষ কারণ রয়েছে।
আখ চাষের বিভিন্ন নিয়মাবলী রয়েছে বর্তমানে হাইবিড যেসকল আখ চাষ করা হয়
এ সকল আখ চাষের জন্য ভালো জমি ও ভালো পরিচর্যার প্রয়োজন থাকে। ভালোভাবে
পরিচর্যা না করলে এ সকল আখ উৎপাদন খুবই কম হয় এবং কৃষকের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার
সম্ভাবনা থাকে। এ কারণে ভালো উৎপাদন পেতে হলে অবশ্যই ভালো পরিচর্যা করতে হবে
এবং ভালো জাতের আখ রোপন করতে হবে। আখ চাষের বিশেষ কোনো নিয়ম নেই হাইব্রিড অথবা
দেশল যেই আখ চাষ করা হোক না কেন একই নিয়মে চাষ করা হয়।
শুধুমাত্র
পরিচর্যার ক্ষেত্রে গিয়ে আলাদা আলাদা হয়। আর চাষের প্রথম নিয়মে জমি চাষ করে
নিতে হবে এবং তার পূর্বে আখ ৬ ইঞ্চি বা দুই চোখ বিশিষ্ট আখ টুকরো টুকরো
করতে হবে তারপরে সেগুলোকে চারা বা কুশি বের হওয়ার জন্য বীজতলা তৈরি
করতে হবে বীজতলায় থাকা অবস্থাতেই আখির চারা বের হয় আখ থেকে পরবর্তীতে
সেগুলোকে জমিতে রোপন করার জন্য নিয়ে যাওয়া হয় জমিতে সারিবদ্ধ ভাবে রোপন করা
হয়। প্রায় এক ফিট দূরত্বে বজায় রেখে আখের চারা রোপন করা হয়।
চারা
রোপনের পূর্বে অবশ্যই জমি তে চারা রোপণের ব্যবস্থা করে নিতে হবে হাইব্রিড
জাতের আখ চাষ করার জন্য জমি ভালোভাবে চাষাবাদ করে নিতে হয় এবং মাটি ঝুরঝুর করে
নিয়ে চারা রোপণ করতে হয় এছাড়াও চারা রোপনের আগে মাটিতে নানা রকমের ষাঁড় ও
কীটনাশক মিশিয়ে নিতে হয় যাতে করে মাটিতে কোন প্রকার রোগ জীবাণু না থাকে। যা
চারা নষ্ট করে ফেলতে পারে।আখের চারা রোপন হয়ে গেলে পানি দিতে হবে বা শেষ
প্রকল্প চালু রাখতে হবে তারপরে সেগুলো মাটির সঙ্গে লেগে গেলে গাছ বড় হতে থাকে
এবং একসময় আখের গুড়ি থেকে থেকে নতুন চারা বের হয় সেগুলো কেউ যত্ন করে
নিতে হয় এভাবে ধীরে ধীরে আখের তারা বৃদ্ধি পায় এবং অনেকগুলো করে ঝাড়ে পরিণত
হয় এবং একসময় পরিপূর্ণ আখে রূপান্তরিত হয়। হাইব্রিড জাতের আখ কেবল একবার
রোপণ করে একবারই পাওয়া যায় কিন্তু দেশীয় আখ একবার রোপন করলে দুই থেকে তিন
বার আখ উৎপাদন করা যায়।
বর্তমানে আখের চাষ যেমন কমছে তেমনি আখের গুড়ের চাহিদা ও বাড়ছে আখের গুড় যেমন
চাহিদা বাড়ছে সে কারণে আখের গুড়ের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ মাত্রায়।
কেননা এই আঁখ দিয়েই চিনি তৈরি হয় আবার আখ দিয়েই আখের গুড় তৈরি হয় এ কারণে
আখের উৎপাদন কম হওয়াতে চিনি অথবা আখের গুড়ের দাম অনেক বেশি। দেশের বিভিন্ন
অঞ্চলে আগে আখের চাষ হতো কিন্তু বর্তমানে প্রায় কিছু সংখ্যক এলাকাতে আখের চাষ
করা হয়। তাও এগুলোর বেশিরভাগই সরকারি জমিতে সরকারিভাবে চাষ করা হয়
ব্যক্তিগত মালিকানা বা ব্যক্তিগত কোন কিছু দেশীয় আখ চাষে বিলুপ্ত।
কেননা এক উৎপাদন খরচ এবং বিক্রির তুলনামূলক লাভহংশ পরিমাণ খুবই কম। তবুও
দেশে যেহেতু আখের গুড়ের চাহিদা রয়েছে এ কারণে আখের গুরু উৎপাদন করতে হয় এ
কারণে আখ মেশিনে মাড়াই করে রস বের করে নিতে হয়। সেই রস কে জাল দিয়ে একসময়
আখের গুড়ে রূপান্তরিত করা হয় এতে করে কৃষকের বা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হতে
পারে অথবা কৃষক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রয় করে দিতে পারে। গুরু
উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আর ক্রয় করে নিয়ে গুরু তৈরি প্রক্রিয়া জাত করেন।
আখ চাষের প্রয়োজনীয়তা কি
বর্তমান বাজারমূল্য চাহিদা ভোক্তা চাহিদা দিকে লক্ষ্য করলেই বোঝা যায় যে আখ
চাষের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু। কেননা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের মধ্যে
আমাদের চিনি প্রধান। আর এই চিনি উৎপাদন করার জন্য আখের প্রয়োজন হয়। তাহলে আখ
চাষের প্রয়োজন রয়েছে । বিগত দিনে দেশে যথেষ্ট পরিমাণ আখ চাষ হওয়ার কারণে
চিনির বাজার মূল্য খুব একটা বৃদ্ধি পায়নি তবে বর্তমানে দেশে আখ উৎপাদন বন্ধ
থাকায় দেশের বাইরে থেকে চিনি আমদানি করেও দেশের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব
হচ্ছে না। যে কারণে চিনির বাজার মূল্য দ্বিগুণ হওয়াতেও চিনির চাহিদা কমছে না।
চিনি আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয় একটি জিনিস এটা যদি আমরা নিত্য প্রয়োজনীয় মনে
করি তাহলে আমাদের আখ উৎপাদন করা দরকার রয়েছে। কেননা আখ উৎপাদন
করেই কেবল চিনির দাম বৃদ্ধি হতে আটকানো সম্ভব। যথেষ্ট পরিমাণ আখ উৎপাদন
হলে দেশেই চিনি উৎপাদন করা সম্ভব হবে তখন দেশের বাইরে থেকে চিনি আমদানি করার
প্রয়োজন থাকবে না এবং চিনির বাজার মূল্য আমাদের হাতের নাগালে থাকবে। এ কারণে
আমাদের আক চাষের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম বলে গণ্য করতে হবে।
এছাড়াও আখ শুধু
চিনি বা গুড় উৎপাদনেই থেমে নেই, আখের ছোবড়া থেকে তৈরি হচ্ছে কাঠের বিপরীত
ব্যবস্থা করার মতন বোর্ড, যেগুলো দিয়ে নানা রকম আসবাবপত্র যেমন টেবিল ,চেয়ার
,খাট, ওয়ার্ড ড্রপ ,ড্রেসিং টেবিল ,শোকেস, কাঠের ব্যবহারকৃত আসবাবপত্রের
অধিকাংশ জিনিসই বোর্ডের তৈরি করা যায় আর এই বোর্ড তৈরি করার প্রধান উপাদান
আখের ছোবড়া হিসেবে ব্যবহার করা হয়। এসকল দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে
আমাদের আখ চাষের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। একমাত্র আখের সঙ্গে কতগুলো বিষয়ের
সম্পর্ক জড়িয়ে রয়েছে যে বিষয়গুলো আমাদের নিত্যদিন বা আমাদের ঘরের
সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে। এ সকল বিষয়ে মাথায় রেখে
আমাদেরকে আবারো আগের মতোই আখ চাষে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
আখের গুড় বাজারজাত করা এবং ঘরে রক্ষন করার প্রক্রিয়া
আখের গুড় বাজারজাত করা এবং ঘরে রক্ষণ করার প্রক্রিয়াকে আমরা কি বলতে পারি।
যেখানে আমরা প্রয়োজনীয় উৎপাদন সক্ষম নয়। সেখানে রক্ষন কিভাবে করব। রক্ষণ
করার পূর্বে আমাদের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে উৎপাদন বৃদ্ধি করলেই আমরা রক্ষন
করতেও সব সক্ষম হব। আখের গুড় বাজারজাত করার পূর্বে আমাদের যে বিষয়গুলো লক্ষ্য
রাখতে হবে তা হলো পরিবেশগতভাবে আখের গুড় ভালো পরিবেশে তৈরি করে তারপরে সেই
গুণগুলো বাজারজাত করা উচিত কেননা এটি একটি খাদ্যদ্রব্য তাই এতে কোন প্রকারের
ভেজাল মেশানো উচিত হবে না। আখের গুড় খেজুরের গুড়ের মতোই শক্ত পাটালি তৈরি করা
যায় আবার মাটির হাঁড়িতেও রাখা যায় একই রকম ভাবে বাজারজাত করা যায়
এই গুর।
আখের গুড় পাঠালি অথবা হাঁড়িতে জমিয়ে বাজারজাত করা যায়। বাজার
করে খোলা বাজারে সাধারণত এগুলো বিক্রি হয় এছাড়াও বাড়িতে রক্ষণের জন্য এই
গুড় হাঁড়িতেই রাখা হয় তবে অবশ্যই আখের গুড় মাটির হাড়িতে রাখলে সেটি ভালো
থাকবে। অনেক বড় বড় গুড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান আখের সিজনে অনেক গুণ
উৎপাদন করে এবং সেগুলোকে বাড়িতে বা গোডাউন জাত করে রাখে যা পরবর্তীতে বেশি দাম
বা বাজারের ঊর্ধ্বগতি দেখে বিক্রি করে। এ কারণে রক্ষণের বিষয়টিও ভালোভাবে
লক্ষ্য রাখতে হবে। যেন গুড় নষ্ট না হয়ে যায় তবে যদি ভালো গুড় উৎপাদন করা
যায় সেই রক্ষণ করলে কখনোই নষ্ট হবে না।
উপরোক্ত প্রত্যেকটি বিষয়ে মাথায় রেখে আমাদের আখ চাষের উপচে পড়তে হবে। কেননা
আখের সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় জড়িয়ে রয়েছে যে বিষয়গুলো আমাদের নিত্য প্রয়োজনীয়
এবং এই জিনিসগুলোর বা দব্যমূল্য গুলোর দাম ঊর্ধ্ব গতিতে রয়েছে। শুধুমাত্র উৎপাদন
ক্ষমতা কম হওয়ার কারণে এই জিনিসগুলোর দাম ঊর্ধ্ব গতিতে রয়েছে। আমরা যদি এর
উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারি তাহলে অবশ্যই এর দাম নিম্ন মূল্যে আনতে পারব এবং
সকলের হাতের নাগালে থাকবে এই দিক লক্ষ্য করে হলেও আখ চাষেরপ্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
এছাড়াও আখের গুড় তৈরি করা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ব্যবস্থা করতে হবে কেননা যেহেতু
আখ বারো মাস পাওয়া যায় না সেহেতু যখন আখ উৎপাদন হয় তখন আখের গুড়
উৎপাদন করে বাজারজাতকরণ বা রক্ষন করতে পারে। বা বড় বড় ব্যবসায়ীরা আখের
গুড় গোডাউন জাতরকরে রাখেন। এবং পরবর্তীতে বাজারের উর্ধ্বগতি হলে গুড়
বিক্রি করে ভালো মুনাফা অর্জন করেন।
No comments:
Post a Comment