কমলা লেবু খাওয়ার উপকারিতা কি
কমলা লেবু একটি সুস্বাদু সুমিষ্ট ফল , কমলালেবু নানারকম রোগের প্রতিশোধক হিসেবে কাজ করে আসছে আমরা যদি নিয়মিত খাই তাহলে আমাদের শরীরে থাকা নানা রকম ব্যাকটেরিয়া ও অন্যান্য রোগ জীবাণু হতে মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কমলা লেবু
খাওয়ার উপকারিতা ও অপরিসীম। কমলা লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি
বা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে এবং ক্যান্সারের
ঝুঁকি কমায়। সেইসঙ্গে পেটে পাথর হওয়া থেকে রক্ষা করে কমলালেবু। কমলা লেবুতে
ভিটামিন সি থাকার কারণে কেটে পাথর হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম থাকে। এবং ক্যান্সারের
জীবাণুর সঙ্গে কমলা লেবু থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লড়াই করে।
পোস্ট সূচিপত্র:কমলা লেবু খাওয়ার উপকারিতা কি
- ভূমিকা
- কমলা লেবুর উপকারিতা কি কি
- শীতে কমলা লেবু খাওয়ার উপকারিতা
- কমলা লেবুর জুস খাওয়ার উপকারিতা ও তৈরি
- কমলালেবুর খোসা খাওয়ার উপকারিতা
- উপসংহার
ভূমিকা
কমলালেবু একটি সুমিষ্ট ফল। যেটা বর্তমানে আমরা বারোমাসি পেয়ে থাকি তবে এই কমলালেবুর চাষ বাংলাদেশের উপায় প্রত্যেকটি অঞ্চলে হয় না, কিন্তু বর্তমানে প্রযুক্তির উন্নতির ফলে কমলালেবুর বীজ প্রক্রিয়া করে দেশের প্রত্যয় অঞ্চলেই কমলা লেবুর চাষ শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এই লেবুর চাষ হওয়ার কারণে এর চাহিদা ও গুরুত্ব অনেক।
যদি এই ফলটি সারাদেশে উৎপাদন হয় না তবে দেশের কিছু অঞ্চল জাতীয় এই ফলটি চাষ করা হয়। অনেকেই বাড়ি আনাচে-কানাচে দুই একটি কমলা লেবুর গাছ রোপণ করে থাকেন। কিন্তু মাটি ভেদে কমলা লেবু ফলন এবং স্বাদ কম বেশি হয়ে থাকে। প্রতিটা অঞ্চলে কমল লেবুর চাষ না হয় এর দাম এবং কৃষকের মূল্যায়ন অপরিসীম। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোতে কমলালেবুর চাষ করে চাষিরা প্রায় আজ তাদের জীবন উন্নত সাধন করতে পেরেছে।
কমলালেবুতে রয়েছে ভিটামিন সি বা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার শরীরে কাজ করে। আমরা যদি নিয়মিত কমলা লেবু খাই তাহলে
আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি হবে এবং অনেক রোগের প্রতিশোধক হিসেবে
কমলালেবু কাজ করবে।
আরো পড়ুন: কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
কমলা লেবুর উপকারিতা কি কি
কমলালেবু একটি সুস্বাদু ফল এই ফলের নানারকম উপকারিতা রয়েছে। আমরা যদি রেগুলার কমলালেবু খেয়ে থাকি তাহলে অবশ্যই আমরা এর ফলের উপকারিতা অনুভব করতে পারব। উপকারিতা নিম্নরূপ
ভিটামিনের ক্ষেত্রে: ভিটামিনের ক্ষেত্রে কমল লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন
সি বা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যার শরীরে ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করে এবং এতে
রয়েছে ভিটামিন বি ও ভিটামিন এ। পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম ,ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস ও
কোলিন সহ আরো অন্যান্য উপাদানের উপস্থিতি রয়েছে কমলালেবুতে
কোলেস্টেরল এর ক্ষেত্রে:কোলেস্টেরল এর ক্ষেত্রে কমলালেবুর ভূমিকা অপরিসীম শরীরে রক্তে জমে থাকা কোলেস্টেরল বা ক্ষতি কার কোলেস্টেরল কাটাতে কমলা লেবু কাজ করে এবং শরীরের ভালো কোলেস্টেরল উৎপাদনে সহায়তা করে । এটি রক্ত স্রোতে শোষিত হওয়ার আগেই শরীর থেকে ক্লোস্টেরল দূর করে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ রাখে।
চোখের জন্য: চোখের জন্য কমলালেবু ভূমিকা অপরিহার্য চোখের দৃষ্টি শক্তি রক্ষা করতে
এবং চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকেন।
ডায়াবেটিস রোগীর জন্য: ডায়াবেটিস রোগীর জন্য কমলা লেবু উপকারিতা রয়েছে।
কমলালেবু তে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে
সহায়তা করে। এটা শরীরে ইনসুলেশন তৈরি করে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসতে
সাহায্য করে।
ওজন কমাতে: কমলা লেবুতে থাকা ভিটামিন সি এর কারনে শরীরের ওজন কমতে সাহায্য করে।
নিয়মিত কমলা লেবুর রস খেলে শরীরের ওজন ধীরে ধীরে কমতে থাকে। কমলা লেবুতে
থাকা ভিটামিন সি বা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের চর্বি কাটতে সাহায্য করে এবং শরীর
থেকে দ্রুত চর্বি কাটার কারণে শরীরের ওজন কমতে থাকে, যারা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে
সমস্যায় ভুগছেন তারা নিয়মিত কমলালেবু খেতে পারেন।
ত্বকের জন্য: ত্বকের জন্য কমলা লেবু ভূমিকা রয়েছে কম্পিউটার থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের জন্য কাজ কর এবং বার্ধক্য জনিত লক্ষণসমূহ কমলালেবু পরিচিত। এবং এটি ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন:লেবু খাওয়ার উপকারিতা অপকারিতা এবং চাষের নিয়মাবলী
শীতে কমলা লেবু খাওয়ার উপকারিতা
শীতকাল মানেই কমলালেবু, শীতকালে কমল লেবুর খাওয়ার ব্যাপক উপকারিতা রয়েছে তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী শীতকালে প্রতিদিন কমলালেবু খাওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন।রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখতে কমলালেবু খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে যেমন সোডিয়াম কম খাওয়ার কথা বলা হয়েছে তেমনি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য পটাশিয়াম এর প্রয়োজন রয়েছে আর কমলালেবুতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
কমলা লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ও এন্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরে ক্যান্সারের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে। এবং ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা হতে মুক্ত করে। আরও রয়েছে পটাশিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ফসফরাস ও কোলিন যার সবগুলোই হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও কমলো লেবুতে থাকা ভিটামিনের কারণে স্ট্রোক হওয়ার বা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে
কমল লেবুর জুস খাওয়ার উপকারিতা ও তৈরি
আমরা নিয়মিতভাবে কমলালেবু খেয়ে থাকি। তবে এই কমলা লেবুর জুস হিসাবে খাওয়াও খুবই উপকারিতা রয়েছে, কমলালেবুর জুস খাওয়ার জন্য একটি পরিষ্কার কমলা লেবু নিতে হবে। এটির খোসা ছাড়িয়ে কমলালেবু বেলেন্ডার এ জুস করা যেতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কমলালেবুর জুস শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কেউ যদি
নিয়মিত কমলা লেবুর জুস পান করে তবে তার শরীরের নানান রকম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
তৈরি করবে। কমলা লেবু কাঁচা এবং পাকা দুটোরই জুস খাওয়া যায় কাঁচা কমলের জুস
খাওয়ার বিশেষ কিছু উপকারিতা ও রয়েছে আবার পাকা কমলা লেবুর জুস খাওয়ার আলাদা
একটা স্বাদ ও পুষ্টিগুণ রয়েছে।
আরো পড়ুন: মিষ্টি খাওয়ার উপকারিতা - সকালে খালি পেটে মিষ্টি খেলে কি হয়
কমলালেবুর খোসা খাওয়ার উপকারিতা
আমরা সবাই জানি কমলালেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং এন্টিঅক্সিডেন্টসহ অন্যান্য ভিটামিনের উৎস তবে এটা কি জানা যায় যে কমলা লেবুর খোসাতে রয়েছে একাধিক ভিটামিন ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণের উৎস। কমলালেবুর খোসাতে রয়েছে ভিটামিনের সঙ্গে সঙ্গে মিনারেলেরও উৎস যা একইভাবে শরীরের জন্য অপরিহার্য বা প্রয়োজনীয়।
কমলালেবুর খোসাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি ফোলেট ভিটামিন বি সিক্স ক্যালসিয়াম ফাইবার সহ একাধিক পুষ্টিগুণের উৎস রয়েছে কমল লেবুতে। এছাড়াও আমাদের হয়তো জানা নেই কমলালেবুর খোসাতে রয়েছে এন্টি ক্যান্সারিয়াস উপাদান। কমলা লেবুর খোসাতে রয়েছে লাইমেনন যা একভাবে প্রাকৃতিক রাসায়নিক তৈরি করে এবং এটি ক্যান্সারের প্রতিশোধক হিসেবে কাজ করে। আপনি যদি কমলা লেবু খোসা খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই কমলালেবুটি স্বচ্ছ ও পরিষ্কার হতে হবে এবং প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদনশীল কমলালেবু হলে সবচাইতে ভালো হয়। কমলালেবুর খোসা খাওয়ার পূর্বে অবশ্যই ভালোভাবে গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
কেননা কমলালেবুর খোসার উপরে নানান রকম বিষাক্ত এবং অন্যান্য বিষাক্ত
পোকামাকড় বা তার বিষ্ক্রিয় থাকতে পারে। যদি কমলালেবুর খোসা খেতে চান তাহলে কমল
লেবু খোসা সালাদের সাথে খেতে পারেন প্রথমত কম লেবুর খোসা ছোট ছোট করে কেটে এটি
সালাত বা স্যান্ডউইচ এর সঙ্গে খেতে পারেন তবে এতে করে কমল লেবুতে থাকা বা
কমলালেবুর খোসার তিক্ততা অনুভব করতে পারেন। এ কারণে কমলালেবুর খোসা রান্না করে
খাওয়া যায় এতে কমলালেবুর খোসার পুষ্টিগুণ বজায় থাকে এবং এর তিক্ততাও থাকে
না আপনি যদি কমলালেবুর খোসা বা কমলালেবুর ভক্ত হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এভাবে
নিয়মিত কমলা লেবুর খোসা বা কম লেবু খেতে পারেন।
উপসংহার
উপরোক্ত বিষয়গুলো হতে আমরা জানলাম কমলালেবুর উপকারিতা কমলালেবুর খোসার উপকারিতা এবং কমলালেবু খাওয়ার সময়। এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে যদি আমরা নিয়মিত কমলা লেবু খেয়ে থাকি তাহলে আমাদের নানারকম রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করবে শরীরে। এবং আমরা নানারকম রোগ হতে মুক্ত থাকতে পারবো। এজন্য আমাদের নিয়মিত কমলা লেবু খাওয়া উচিত। যদিও কমলা লেবু আমাদের দেশের প্রতিটা অঞ্চলে চাষাবাদ না হওয়ার কারণে এর দাম আমাদের অনেকের হাতের নাগালের বাইরে ।
সে কারণে অনেকেই ইচ্ছে করলেও কমল
লেবু নিয়মিত খেতে পারে না। তবে অঞ্চল ভেদে প্রায় সব জায়গায় কমলালেবুর চাষ করা
যায়। তবে মাটি বেঁধে কমলালেবুর স্বাদ ও গুনাগুন এক এক রকম হয়ে থাকে। কমলেবু
যেমন বিভিন্ন রোগের প্রতিশোধক হিসেবে কাজ করে তেমনি অতিরিক্ত হারে কমলা লেবু
শরীরের কিছু ক্ষতির কারণও হতে পারে। তাই আপনার যদি মনে হয় যে কমলালেবুর রস বা
খোসা আপনার শরীরে ক্ষতির কারণ হিসেবে দেখা দিচ্ছে তাহলে অবশ্যই আপনি ডাক্তারের
পরামর্শ নিয়ে কমলালেবু খান।
No comments:
Post a Comment