ধূমপান ও মাদকদ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকার উপায় ও ঝুঁকি মোকাবেলা - M.A IT FIRM

ধূমপান ও মাদকদ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকার উপায় ও ঝুঁকি মোকাবেলা

 

 ধূমপান ও মাদকদ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকার উপায় ও ঝুঁকি মোকাবেলা


মাদকাসক্তি হলো ব্যক্তির জন্য ক্ষতিকর। এমন একটি মানসিক ও শারীরিক প্রতিক্রিয়া যা জীবিত ব্যক্তি ও তার সীমিত মাদকের পারস্পরিক ক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সৃষ্টি হয়। যে দ্রব্য গ্রহণের ফলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক পরিবর্তন ঘটে এবং ওই দ্রব্যের প্রতি নির্ভরশীল সৃষ্টি পাশাপাশি গ্রহণের উদগ্র আকাঙ্ক্ষা ক্রমশ বৃদ্ধি প্রাপ্ত হয় এমন দ্রব্য কে মাদকদ্রব্য বলে ।

ধূমপান ও মাদকদ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকার উপায় ও ঝুঁকি মোকাবেলা


মাদকাসক্তি বলতে মাদকদ্রব্যের প্রতি আসক্তি বা নেশা কে বোঝায় সিগারেট, বিড়ি, তামাক,  মদ ,গাঁজা, সরস ,আফিম, মারিজুয়ানা, হিরোইন ,মার্সিন ,ফেনসিডিল, ইয়াবা ইত্যাদি মাদকদ্রব্য । এক ভয়ঙ্কর নেশা এই নেশার আসক্ত হলে সহজে কেউ পরিত্রাণ পায় না।আমাদের শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আছে,যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিতে পারে।


পেজ সূচিপত্র: ধূমপান ও মাদকদ্রব্য সেবন থেকে বিরত থাকার উপায় ও ঝুঁকি মোকাবেলা

ভূমিকা

ধূমপান ও মাদক দ্রব্য সেবনের কুফল সম্পর্কে পরবর্তী পাঠে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়েছে কিন্তু সুস্থ ও সুন্দর জীবন যাপনের জন্য বিষয়টি সম্পর্কে শুধুমাত্র জানায় যথেষ্ট নয়।মানুষের জীবনের জন্য ক্ষতিকর এমন মারাত্মক অভ্যাসটি যাতে ত্যাগ করা যায়, সেজন্য এখনো এই বিষয়ে বাস্তব কর্মপন্থা গ্রহণ করতে হবে ।এজন্য প্রথম ওই দরকার কোন অবস্থাতে ধূমপানসহ অন্য কোন মাদকদ্রব্য গ্রহণ না করার প্রতিজ্ঞা।

আরও পড়ুন: বৈদ্যুতিক সার্কিট বেকার কি এবং এটা কি কাজ করে

কারণ কিশোর-কিশোরীদের বয়সন্ধিকালে জানা অজানা বিষয়ের প্রতি প্রচন্ড আগ্রহ থাকে ।এই কঠিন ও উত্তেজনা বাসক কিংবা বন্ধুবান্ধবসহ কারো দ্বারা প্রবাহিত হয়ে তারা ধূমপান বা মাদকদ্রব্য সেবন করতে পারে। এই কৌতূহ উত্তেজনা সারা জীবনের জন্য তার অনুশোচনা কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ,তাই কৌতূহল মিটাবার পূর্বে ওই কিশোরের বা কিশোরীকে ভাবতে হবে ধূমপান বা মাদক সেবনের পরে কি কি কুফল দেখা দেবে। এবং এই কুফলসমূহ বিবেচনা করলে তারা মাদক সেবন করা উচিত হবে কিনা এই ব্যাপারে ধারণা নিতে পারবে ।

ওষুধ ও মাদকদ্রব্যের মধ্যে পার্থক্য

১। ওষুধ সেবন করলে রোগ মুক্তি ঘটে মাদক সেবনে শরীরের নানা রকম রোগের সৃষ্টি হয়

২। ওষুধ গ্রহণের মাত্রা নির্ধারিত থাকে মাদকের মাত্রা নির্ধারিত থাকে না

৩। অসুখ সেরে গেলে ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় না কিন্তু মাদকে আসক্ত হলে সহজে ছাড়া যায় না

বাংলাদেশের যে সকল মাদকদ্রব্য প্রচারিত আছে সেগুলো হল হিরোইন, গাজা, আফিম,ইয়াবা এবং ঘুমের ওষুধ। এবং তামাক জাতীয় মাদকদ্রব্য তামাক গাছের পাতা থেকে তামাক জাতীয় মাদকদ্রব্য তৈরি হয়।তামাক পাতার নিকোটিন থাকে যা এক ধরনের মাদক এবং অনেক প্রকৃতির মাদকদ্রব্য  তৈরি করা হয়।


তামাক ও মাদকদ্রব্য সেবনের কুফল 

তামাক ও মাদকদ্রব্য সেবন বলতে প্রচন্ড ধূমপান কে বোঝায়। ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বিশ্বস্বাস্থ্য স্বাস্থ্য তথ্য অনুসারে পৃথিবীতে প্রতি সেকেন্ডে শুধু ধূমপানজনিত কারণে একজন ব্যক্তির মৃত্যু হয়। যারা ধূমপান করে তারা ও ধূমপায়ী ব্যক্তির ছেড়ে দেওয়া ধোঁয়া থেকেও অন্যরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মাদকদ্রব্য সেবনে কুফল হচ্ছে.......

১। মাদকদ্রব্য মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে যেমন শিক্ষার ও কাজ করার ক্ষমতা হাঁস করে চাপ সহ্য করার ,সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কে ব্যাহত করে তাছাড়া মানসিক পীরন বাড়িয়ে দেয়

২। পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে যন্ত্রণাদায়ক প্রভাব ফেলে মাদক সেবক পরিবারের সদস্যদের সাথে উগ্র আচরণ করে পরিবারের শান্তি বিনষ্ট করে

৩। শারীরিক সুস্থতার ক্ষেত্রে মারাত্মক প্রভাব বিস্তার করে মাদকদ্রব্য সেবন মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষ কে ধ্বংস করে খাদ্য অভ্যাস নষ্ট করে চোখের দৃষ্টি শক্তি কমিয়ে দেয়

৪। কিছু কিছু মাদক এই ছবি ও হেপাটাইটিস বি এর সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় খাদ্যনালী ও ফুসফুসে ক্যান্সার কিডনি রোগ রক্তচাপ প্রগতি বহুবিধ রোগের সৃষ্টি করে

৫। আর্থিক ক্ষতি হয় নিজের টাকা জোগাতে গিয়ে সংসারের অভাব ও অশান্তির সৃষ্টি হয়

মাদকাসক্তির ঝুঁকি পূর্ণ পরিস্থিতি সৃষ্টি

মাদকদ্রব্য গ্রহণের জন্য কিশোর কিশোরীদের উপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়, বন্ধুবান্ধব বা সহপাঠীদের মধ্যে কেউ মাদকাসক্ত থাকলে সে প্রস্তাব দিতে বা চাপ সৃষ্টি করতে পারে ।এছাড়া যারা মাদক ব্যবসায়ী বা মাদক বিক্রেতা তারাও কিশোর কিশোরীদের মাদক গ্রহণের জন্য নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

আরো পড়ুন: ফুলকপি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা এবং বিভিন্ন জাতের ফুলকপি চাষের নিয়মাবলী

 এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে সৃষ্টি হয় ,বন্ধুরা চাপ সৃষ্টি করল যদি কেউ চাপের কাছে নতি স্বীকার করে মাদক গ্রহণ করা শুরু করে তবে তার সর্বনাশ ঘটে।আবার মাদক গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে বন্ধুত্ব নষ্ট হয়, বন্ধু অন্য কেউ যদি মাদক গ্রহণের জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং তা প্রত্যাখ্যান করলে তার দ্বারা ক্ষতির আশঙ্কা থাকে এ ধরনের ঝুঁকির পরিস্থিতিতে যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন।

ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবেলার মাধ্যম গুলো

প্রথমে দেখতে হবে মাদক গ্রহণের জন্য যে বা যারা প্রথমে দিচ্ছে তারা বা তাদের আচরণ ক্ষমতা প্রভাব কেমন ।এসব দিক বিবেচনা করে মাদক গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে হবে যাতে কোন ক্ষতির আশঙ্কা না থাকে ,প্রত্যাখ্যান করার সময় নিজেকে সংযত রাখতে হবে।আর যদি সরাসরি না বলতে পারা না যায় তাহলে কৌশলে পরিস্থিতিতে এড়ানোর জন্য ত্যাগ করতে হবে। চাপ সৃষ্টি করা ব্যক্তি যদি বন্ধু বা অপরিচিত জন হয় তবে এমন ভাবে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে হবে যেন সম্পর্ক নষ্ট না হয়।

আর যদি মনে হয় যে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান কোন সমস্যা সৃষ্টি হবে না তাহলে তাকে মাদকের কুফল সম্পর্কে বুঝাতে হবে ।এই পথ থেকে তাকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে আর মাদক গ্রহণের জন্য যদি চাপ সৃষ্টিকারী ব্যক্তি কোন ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে পিতা-মাতা বা অভিভাবক কিংবা বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বিষয়টি জানাতে হবে। সর্বনাশা মাদক থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হলে কৌতুহলীদের বশবর্তী হয়েও কোন মাদক গ্রহণ করা যাবে না।


মাদকাসক্তির বিরুদ্ধে জনমত গঠন

মাদকাসক্ত বর্তমান সমাজের জন্য একটি বড় সমস্যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশের মাদকাসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এবং তা ক্রমবয়ে প্রকট আকার ধারণ করেছে যারা মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে তারা তাৎক্ষণিকভাবে মৃত্যুর মুখে পতিত হয় না বটে কিন্তু মাদক গ্রহণের কারণে তারা নানা ধরনের শারীরিক মানসিক সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। শুধু যে মাদকাসক্ত ব্যক্তি মা বাবা ভাই বোন ছেলেমেয়ে আত্মীয়-স্বজন সবার জীবনে এর প্রভাব পড়ে ।

আরো পড়ুন:  কিভাবে কম্পিউটার ও কম্পিউটার ব্যবহারকারী নিরাপত্তা দেওয়া যায়

এবং সবাইকে ক্ষতিগ্রস্ত হয় মাদকাসক্ত ব্যক্তিরা মাদকের অর্থ জোগাড় করার জন্য চুরি ডাকাতি কোন রাহাজানি সহ বিভিন্ন অসামাজিক ও বেআইনি কাজকর্মে লিপ্ত হয় যা ব্যক্তি পরিবার সমাজ ও জাতির জন্য খুবই ক্ষতিকর , মাদকাসক্তির ভয়াবহ পরিণতি থেকে যুব সমাজ সহ দেশের সবাইকে রক্ষা করতে হলে মাদকদ্রব্যের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন ও স্বেচ্ছার করতে হবে ।তার জন্য যে আইন আছে সেই আইনে যথা প্রয়োগ করতে হবে মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন করে তুলতে জনমত গঠন করতে হবে

মাদকমুক্ত থাকার ক্ষেত্রে অন্যদের ভূমিকা

মাদকাসক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে মাদকাসক্ত বন্ধু-বান্ধবদের ক্ষতিকর বেশ বড় ভূমিকা পালন করে । তবে সব বন্ধুই কি মাদকাসক্ত নিশ্চয় না দু একজন হয়তো দুর্ভাগ্যক্রমে মাদকাসক্ত হয় তবে বেশিরভাগ বন্ধু ভালো হয় ।এই ভালো বন্ধুরাই অন্য বন্ধুদেরকে মাদক গ্রহণ না করার জন্য প্রস্তাবিত করতে পারে। মাদকমুক্ত থাকার ক্ষেত্রে বন্ধু বা সমবয়সী ছাড়াও আরো অনেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে

যেমন সন্তানের প্রতি অভিভাবকের সতর্ক দৃষ্টি সবচেয়ে বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখে।এছাড়া বিদ্যালয়ের শিক্ষকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষক আদর্শ স্বরূপ চোখের আদেশ ও উপদেশ শিক্ষার্থীর আন্তরিকভাবে পালন করে । শ্রেণিকক্ষে বা শ্রেণিকক্ষের বাইরে শিক্ষকের আদেশ ও উপদেশ শিক্ষার্থীরা মাদক পরিহার করে চলতে পারে ,আত্মীয়-স্বজন প্রতিবেশীরাও স্নেহ ভালোবাসা ও আন্তরিকতা দিয়ে মাদক মুক্ত রাখতে পারে। এছাড়া বিভিন্ন টেলিভিশন মাদকবিরোধী প্রচার জ্বালিয়ে ব্যাপক গণসচেতনতা তৈরি করা যায় এর বাইরে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেও মাদকমুক্ত সমাজ গড়া যায়।

 উপসংহার

জনসচেতনতা সৃষ্টির সময় ”মাদক কিছুই দেয় না বরং কেড়ে নেয় সবকিছু ”এরূপ শ্লোগান দিয়ে বিভিন্ন মাধ্যমে প্রচারণা চালাতে হবে। মাদক সেবীরা মনে করে মাদক মানুষের দুঃখ ভুলতে সাহায্য করে এবং আনন্দ দেয় এটা একেবারেই ভুল ধারণা মাদক বরং আরো যন্ত্রণা টেনে আনে। কাজেই পরিচিত জনের মধ্যে কেউ মাদকাসক্ত হয়ে পড়লে আত্মীয়-স্বজন সবাই মিলে তাকে এই সর্বনাশের পথ থেকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা উচিত।

No comments:

Post a Comment