সুস্থ দেহ ও জীবন যাপনে শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা - M.A IT FIRM

সুস্থ দেহ ও জীবন যাপনে শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

 সুস্থ দেহ ও জীবন যাপনে শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

প্রাচীনকালে শারীরিক শিক্ষা বলতে শরীর সম্বন্ধীয় শিক্ষাকে বোঝানো হতো। আধুনিককালে এই ধারণা ভুল বলে প্রমাণিত হয়েছে। শরীর সম্বন্ধীয় শিক্ষা বাস শারীরিক কসরতকে শারীরিক শিক্ষা নয় শরীর চর্চা বলে। শারীরিক শিক্ষা শুধু শরীর নিয়েই আলোচনা করেনা, এর সাথে মানসিক বিকাশ ও সামাজিক গুণাবলী কিভাবে অর্জিত হয় সেই ব্যাপারে সহায়তা করে। শরীর ভালো না থাকলে মন ভালো থাকে না, কাজে মন বসে না, তাই দেহ ও মনের সম্পর্ক অতি ঘনিষ্ঠ।

সুস্থ দেহ ও জীবন যাপনে শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

সুস্থ দেহে সুন্দর মন, প্রাচীন এই প্রবাদটি সর্বযুগে সর্বকালের সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানে শারীরিক উন্নয়ন, মানসিক বিকাশ ও সামাজিক গুনাবলী অর্জনই হলো শারীরিক শিক্ষা। শারীরিক শিক্ষা কর্মসূচি নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে সুস্থ জীবন লাভ করা যায়। একজন শিক্ষার্থী শারীরিক শিক্ষার লাভ করে সুস্থ দেহে সুন্দর মনের অধিকারী হয়ে সমাজে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।

পোস্ট সূচিপত্র:সুস্থ দেহ ও জীবন যাপনে শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

ভূমিকা

শারীরিক শিক্ষা সম্পর্কে কিছু বলতে বা সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে গেলে প্রথমেই শিক্ষা সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। শারীরিক শিক্ষা শিক্ষার অবিচ্ছেদ অংশ। শারীরিক শিক্ষা ছাড়া শিক্ষা অসম্পূর্ণ। শিক্ষা শব্দটির ব্যাখ্যা প্রদান করলে শারীরিক শিক্ষা কি তা বোঝা সহজ হবে। শিক্ষা সম্পর্কে বিভিন্ন পন্ডিত ব্যক্তি নানাভাবে ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন যা বিভিন্ন অবস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট। শিক্ষা শুধুমাত্র বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ নয়, ব্যক্তির শারীরিক, সামাজিক, আবেগিক ও অন্যান্য দিকের সুষম বিকাশ সাধন করা। শিক্ষা ব্যক্তিজীবনের কোন একটি নির্দিষ্ট সময়ে ঘটে না, শিক্ষার জীবনব্যাপী বিস্তত। পরীক্ষা শুধুমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, শিক্ষা অর্জিত হয় পরিবারে, সমাজে, খেলার মাঠে এবং সর্বত্র।

আরো পড়ুন: প্রতিবন্ধী শিশু কাকে বলে- What is a disabled child?

শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য-Aims and objectives of physical education

সাধারণভাবে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এই ধারণার মধ্যে আমরা কোন পার্থক্য করি না। অনেক সময় একের জায়গায় অন্যটি কে ব্যবহার করি। কিন্তু এই দুই ধারনা সামর্থক নয়। এদের মধ্যে পার্থক্য আছে। লক্ষ্য হল চূড়ান্ত গন্তব্যস্থল আর উদ্দেশ্য হলো সেই গন্তব্যস্থলে পৌঁছানোর সংক্ষিপ্ত ও নির্দিষ্ট পদক্ষেপসমূহ যেমন-সিঁড়িবে ছাদে উঠার ক্ষেত্রে লক্ষ্য হলো ছাদ, আর সিঁড়ির এক একটি ধাপ হল উদ্দেশ্য। লক্ষ্যের অস্তিত্ব মানুষের কল্পনায়, রুপায়ন সম্ভব হয় না। কিন্তু উদ্দেশ্য হল বাস্তব। মানুষ উদ্দেশ্য অর্জন করতে পারে এমনকি তার পরিমাপ সম্ভব। শারীরিক শিক্ষাবিদগণ শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য পৌঁছানোর জন্য বেশ কয়েকটি অন্তবর্তী পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছেন। বিভিন্ন শারীরিক শিক্ষা বিজ্ঞান শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য হিসেবে নিম্নলিখিত মত ব্যক্ত করেছেন।

শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য-Aims and objectives of physical education

উইলিয়ামস এর মতে: শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য হলো ব্যক্তির শারীরিক, সামাজিক ও অন্যান্য দিকের সুষম উন্নতি ঘটিয়ে ব্যক্তিসত্তার সর্বাধিক বিকাশ সাধন চেষ্টা করা।

বুক ওয়াল্টার এর মতে: শারীরিক শিক্ষার লক্ষ্য হলো শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক দিক সমূহের সুসমন্বিত বিকাশ সাধন করা। এই বিকাশ সাধনের উপায় হল স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা ও নিয়ম-নীতি অনুসারে পরিচালিত খেলাধুলা, ছন্দময় ব্যায়াম এবং জিমন্যাস্টিক ইত্যাদি ক্রিয়াকর্মে অংশগ্রহণ। এগুলোই শারীরিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হিসেবে স্বীকৃত। বিশেষজ্ঞগণ কিছু উদ্দেশ্য সম্পর্কে একমত হলেও কিছু উদ্দেশ্য নিয়ে মতের ভিন্নতা প্রকাশ করেছেন। উদ্দেশ্যকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে যথা-

  1. শারীরিক সুস্থতা অর্জন: খেলাধুলার নিয়ম কানুন মেনে ভালো করে খেলতে পারা, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হাসিল করা, স্নায়ু ও মাংস পেশীর সমন্বয়ে সাধনে কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি করা, দেহ ও মনের সুষম উন্নতি করা।
  2. মানসিক বিকাশ সাধন।: উপস্থিত চিন্তাধারার বিকাশ সাধন, নৈতিকতা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন, সেবা ও আত্মত্যাগের উদ্বুদ্ধ হওয়া, বিভিন্ন দলের মাঝে বন্ধুত্বপূর্ণ ও প্রতিযোগিতা মূলক মনোভাব গড়ে ওঠা।
  3. চারিত্রিক গুণাবলী অর্জন: অনুগত্যবোধ ও নৈতিকতা বৃদ্ধি পাওয়া, খেলাধুলার মাধ্যমে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাবোধন জাগ্রত হওয়া, খেলোয়াড়ী ও বন্ধুত্বসুলভ মনোভাব গড়ে ওঠা, প্রতিদ্বন্দ্বীদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের মনোভাব গড়ে ওঠা, ও আবেগ নিয়ন্ত্রণ।
  4. সামাজিক গুণাবলী অর্জন: নেতৃত্ব দানের সক্ষমতা অর্জন ও সামাজিক গুণাবলী অর্জন করা, বিনোদনের সাথে অবসর সময় কাটানোর উপায় জানা, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করা, সকলের সাথে সোহাগদপূর্ণ আচরণ ও সেবামূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করা।

আরো পড়ুন: সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠার উপকারিতা এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা

শারীরিক শিক্ষাবিদের মতামত থেকে এটা স্পষ্টভাবে প্রতিমান হয় যে শারীরিক শিক্ষার উদ্দেশ্য সাধারণ শিক্ষার মতোই ব্যক্তি সত্তার সর্বোচ্চ ও সুষম বিকাশ সাধন করে থাকে এবং পরিকল্পিতভাবে খেলাধুলায় পারদর্শিতা অর্জনের সাহায্য করে।

শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা-The need for physical education

শারীরিক শিক্ষা দেহ ও মনের সামঞ্জস্যপূর্ণ উন্নয়ন সাধন করে। শারীরিক শিক্ষা ছাড়া শিক্ষার পূর্ণতা আসে না। যেসব গুণ থাকলে দেশের প্রতিটি নাগরিক সুস্থ সবল ও দায়িত্ব জ্ঞান সম্পন্ন হয়ে গড়ে ওঠে এবং নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়, শারীরিক শিক্ষা সেই গুণাবলী অর্জনে বিশেষ ভূমিকা রাখে। মানুষ সমাজে স্বীকৃতি পেতে চায়। এই স্বীকৃতির মাধ্যমেই তার ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটে। তাই নেতৃত্বও ব্যক্তিত্ব গঠনেও শারীরিক শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। আমাদের দেহ কতগুলো অঙ্গের সমষ্টি। আবার প্রত্যেকটি অঙ্গ নানা পোকার মাংসপেশী, হাড়, শিরা, ধমনী ইত্যাদি নিয়ে গঠিত।

 দেহকে ঠিক রাখার জন্য সব সময় দেহের মধ্যে কতগুলো প্রক্রিয়া কাজ করছে। এই প্রক্রিয়াগুলো সুষ্ঠভাবে চলার জন্য প্রয়োজন শারীরিক সুস্থতা। উপযুক্ত খাবার, অঙ্গ সঞ্চালন, বিশ্রাম ও ঘুম এইগুলির অভাবে শরীর সঠিকভাবে বৃদ্ধি পায় না ও সুস্থ থাকে না। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা দৈহিক ও মানসিক বিকাশের ওপর সমান গুরুত্ব আরোপ করেছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হল সামাজিক প্রতিষ্ঠান। তাই সমাজ সংরক্ষণ, সমাজ সংস্কার ও ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তনের কাজে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমাজ ও দেশের কাছে দায়বদ্ধ। দেশের মানবসম্পদকে সঠিকভাবে বিকাশিত করা এবং আজকের শিশুকে আগামী দিনের সুনাগর হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। 

শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা-The need for physical education

এই ব্যাপারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাজ মূলত দ্বিমুখী। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রথম কাজ হল শিশু শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত বিকাশ সাধন করা। এর মধ্যে শিক্ষার্থীর শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক দিক অন্তর্ভুক্ত। দ্বিতীয় কাজ হল শিক্ষার্থীর  জৈবিক সত্তাকে সামাজিক সত্তায় রূপান্তরিত করা। এর মধ্যে শিশুর চারিত্রিক ও মূল্যবোধের উন্নতি এবং সামাজিক বিকাশ অন্তর্ভুক্ত।

শারীরিক শিক্ষার কর্মসূচি-Physical education program

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খেলাধুলা, ব্যায়াম স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ও বিনোদনমূলক যে সমস্ত কর্মসূচি পরিলক্ষিত হয় তাকে শারীরিক শিক্ষার কর্মসূচি বলে। একজন শারীরিক শিক্ষক যে সমস্ত ক্রিয়া কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেন তাই শারীরিক শিক্ষার কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত। শারীরিক শিক্ষার কর্মসূচিকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় যথা-

অত্যাবশ্যকীয় ক্রিয়া কর্মসূচি(Compulsory Sports Programme): একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে সরকারি নির্দেশনাবলী, শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক ক্লাস, প্রতিযোগিতা প্রত্যাহিক সমাবেশ ও স্থানীয় নির্দেশনা ইত্যাদি সবই অত্যাবশ্যকীয় ক্রিয়া কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত। এই কর্মসূচি গুলো একজন শারীরিক শিক্ষকের অবশ্যই পালন করতে হয়। সরকারি নির্দেশনাবলী বলতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত শারীরিক শিক্ষা বিষয়ক যে সমস্ত নির্দেশনা, যেমন-প্রত্যাহিক সমাবেশ করতে হবে, প্রতিদিন/সপ্তাহে তিনটি ক্লাস নিতে হবে, আন্তঃ স্কুল ক্রিয়া প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হবে, জাতীয় দিবস গুলোতে খেলাধুলা করাতে হবে ইত্যাদি কে বোঝায়। স্থানীয় নিদর্শনা বলতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নিয়ম কানুন সমূহকে বুঝিয়ে থাকে।

আরো পড়ুন: বসন্ত রোগের ঔষধের নাম এবং লক্ষন কি 

অন্তঃ ক্রিয়াসূচি(Intramural Sports): ইন্ট্রামুরাল একটি ল্যাটিন শব্দ।Intra অর্থ ভিতরে এবং Mural অর্থ দেওয়াল। তাহলে সম্পূর্ণ অর্থ দাঁড়ায় দেওয়ালের ভিতরে অর্থাৎ প্রতিষ্ঠানের চারি দেয়াল এর মধ্যে বা নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা আকারে যে সমস্ত খেলাধুলা হয় তাকে ইন্ট্রামুরাল স্পোর্টস বলা হয়। যেমন-বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, নবম শ্রেণী বনাম দশম শ্রেণী ক্রিকেট ম্যাচ, অথবা ষষ্ঠ থেকে ক শাখার মধ্যে প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। যদি হাউজ থাকে তাহলে হাউজে হাউজে যে প্রতিযোগিতা হয় তাও এর আওতায় পড়ে। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছাত্র শিক্ষক বা বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে প্রথম বর্ষ বনাম দ্বিতীয় বর্ষের মধ্যে যে সমস্ত প্রতিযোগিতা হয় সেগুলা ইন্ট্রামুরাল স্পোর্টস এর অন্তর্গত।

শারীরিক শিক্ষার কর্মসূচি-Physical education program

আন্তঃ ক্রিয়াসূচি(Extramural Sports):Extra অর্থ বাইরে Mural অর্থ দেওয়াল অর্থাৎ দেওয়ালের বাইরে যে সমস্ত খেলাধুলা হয় তাকে আন্তঃ ক্রিয়াসূচি বলা হয়। যে সমস্ত খেলাধুলা বা প্রতিযোগিতা এক স্কুলের সাথে অন্য স্কুল, এক কলেজের সাথে অন্য কলেজের মধ্যে খেলা হয় তাকে আন্তঃ ক্রিয়া প্রতিযোগিতা বলে। যেমন-আন্তঃ স্কুল, আন্তঃ কলেজ ,আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয়, আন্তঃক্লাব ইত্যাদি প্রতিযোগিতা বোঝায়।

বাংলাদেশের শারীরিক শিক্ষা-Physical education in Bangladesh

সাধারণ শিক্ষার সাথে শারীরিক শিক্ষা অঙ্গাাঙ্গিভাবে জড়িত। শিক্ষাকে পূর্ণতা দান, কার্যকর ও অর্থবহ করার জন্য শারীরিক শিক্ষা অন্যতম পরিপূরক হিসেবে কাজ করে। ইউরোপের পুনর্জাগরণেও আগে শিক্ষা নিয়ম কানুনের শৃংখলে বাধা ছিল। এ সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষা বলতে আলাদা কিছু ছিল না। সামরিক শক্তির অনুষঙ্গ হিসেবে শারীরিক শিক্ষা কে বিবেচনা করা হতো। রাষ্ট্রের নাগরিককে রাষ্ট্রের বৃহত্তর কল্যাণে গড়ে তোলার প্রয়োজনে শিক্ষা ক্ষেত্রে অমূল্য সংস্কার সাধিত হয়। বাংলাদেশের শারীরিক শিক্ষার ব্যবস্থাপনা ও কর্মসূচিভিত্তিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। 

প্রশাসনিকভাবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সার্বিক শিক্ষার ব্যবস্থাপনা দায়িত্ব পালন করেন। এর অধীনে ক্রিয়া অধিদপ্তর দেশের ছয়টি সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজের প্রশাসনিক ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক কর্মসূচির তদারকি করে থাকে। এসব কলেজ থেকে প্রশিক্ষণ লাভ করে শিক্ষকগণ দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শারীরিক শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হন। এসব শারীরিক শিক্ষার শিক্ষকের মাধ্যমে শারীরিক শিক্ষা কর্মসূচি বাস্তবায়ন তথা খেলাধুলার প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশের শারীরিক শিক্ষা-Physical education in Bangladesh

এছাড়া ক্রিয়া অধিদপ্তরের অধীনে কর্মরত জেলা ক্রিয়া কর্মকর্তা সরকার কর্তৃক গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়নে সহযোগিতা করে থাকে অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন শিক্ষা অধিদপ্তরের শারীরিক শিক্ষা বিভাগে বছরে দুইবার জাতীয় স্কুল ও মাদ্রাসা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এছাড়া তাদের ব্যবস্থাপনায় স্কুল পর্যায়ের শারীরিক শিক্ষা শিক্ষকদের রিফ্রেশার্স কোর্স নিয়মিত পরিচালিত হয়। স্কুল পর্যায়ে বয়সভিত্তিক প্রতিযোগিতা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শারীরিক শিক্ষা কর্মসূচিকে আরো কার্যকর ও বেগবান করা হয়েছে। সামাজিকভাবে বাংলাদেশে শারীরিক শিক্ষার উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ মুল্য কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় জীবনে এর আশু সুফল দৃশ্যমান হবে বলে আশা করা যায়।

আরো পড়ুন: কিভাবে কম্পিউটার ও কম্পিউটার ব্যবহারকারী নিরাপত্তা দেওয়া যায়

উপসংহার

উপরোক্ত বিষয় হতে আমরা শারীরিক শিক্ষা বিষয়ে নানাবিধ জ্ঞান অর্জন করেছি। এবং শারীরিক শিক্ষা কাকে বলে এর প্রকারভেদ বিষয়ে আমরা জেনেছি। আমাদের সুস্থ জীবন যাপনের ক্ষেত্রে শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। শারীরিক শিক্ষার ফলে দেহ ও মন সুস্থ সবল থাকে কেননা সুস্থ দেহই সুস্থ মনের অংশীদার। আমাদের দেশে বিভিন্ন স্কুল কলেজ এ শারীরিক শিক্ষার যে ব্যবস্থাগুলো তৈরি হয়েছে এগুলো আমাদের সমাজ এবং ব্যক্তিগত উন্নতি সাধনে ভূমিকা রাখছে।

No comments:

Post a Comment