সুস্থ জীবন যাপনে শারীরিক সক্ষমতার গুরুত্ব - M.A IT FIRM

সুস্থ জীবন যাপনে শারীরিক সক্ষমতার গুরুত্ব

 সুস্থ জীবন যাপনে শারীরিক সক্ষমতার গুরুত্ব

শারীরিক শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করা। তাই শারীরিক সক্ষমতার বৈশিষ্ট্য, খেলাধুলার সাথে এর সম্পর্ক, শারীরিক সক্ষমতার মূল্যায়ন ইত্যাদি সম্পর্কে শারীরিক শিক্ষার শিক্ষার্থীদের পরিষ্কার ধারণা থাকা প্রয়োজন। 

সুস্থ জীবন যাপনে শারীরিক সক্ষমতার গুরুত্ব

ব্যায়ামের মাধ্যমে শারীরিক সক্ষমতা কিভাবে অর্জন করা যায়, লিঙ্গ ভেদে ব্যায়ামের ধরন ইত্যাদি সম্পর্কে শিক্ষার্থীরা বাস্তব ধারণা লাভ করতে পারবে। শারীরিক সক্ষমতা অর্জনে শক্তি, দম, গতি, ক্ষিপ্ততা ও নমনীয়তার গুরুত্ব এবং কোন খেলায় কোনটির ভূমিকা বেশি তা জানতে পারবো। শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীর অসুস্থ ও সুশৃংখল জীবন যাপনে সক্ষম হবে।

পোস্ট সূচিপত্র: সুস্থ জীবন যাপনে শারীরিক সক্ষমতার গুরুত্ব

ভূমিকা

সুস্থ জীবন যাপনের ক্ষেত্রে শারীরিক সক্ষমতা গুরুত্ব অপরিসীম। শরীর ও মন সুস্থ রাখতে বিভিন্ন রকম শারীরিক সক্ষমতা রাখা প্রয়োজন। প্রান্ত না হয়ে পড়ে সত্যি ও সচেতনের সাথে দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় কাজকর্ম সম্পন্ন করা, আনন্দ ও উৎসাহের সাথে অবসর সময় কাটানো এবং সংকট মোকাবিলায় সমর্থ্য হলো শারীরিক সক্ষমতা। অনেকের মতে যন্ত্রনির্ভর আধুনিক জীবনে কায়িক পরিশ্রমের প্রয়োজন লক্ষণীয়ভাবে হ্রাস পাওয়ায় শারীরিক সক্ষমতার বিভিন্ন সংজ্ঞা বর্তমানে সম্পূর্ণ প্রযোজ্য নয়। শারীরিক সক্ষমতার প্রয়োজনীয় দিকগুলো হলো শরীর বৃত্তির অঙ্গ ও তন্তুসমূহের কার্যক্ষমতা, নতুন পরিবেশের সাথে মানিয়ে নেওয়ার সামর্থ্য ইত্যাদি।

আরো পড়ুন: প্রতিবন্ধী শিশু কাকে বলে- What is a disabled child?

শারীরিক সক্ষমতা এর গুরুত্ব

সাধারণ অর্থে সক্ষমতা হলো কোন কাজ করার সামর্থ্য। বৃহত্তর অর্থে সক্ষমতা বলতে যৌগিক অস্তিত্ব রক্ষা করে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবন যাপন ধারণ করার সামর্থ্যকে বোঝায়। এর মধ্যে ব্যক্তির শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক দিকের সামর্থ্য অন্তর্ভুক্ত। তাই মনে করা হয় যে সক্ষমতা একটি সামগ্রিক ধারণা। সক্ষম ব্যক্তি শারীরিক সুস্থতার সাথে সাথে মানসিক সুস্থতা, আবেগীয় ভারসাম্য ও সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখতে সমর্থ হন। শারীরিক সক্ষমতার এই সামগ্রিক ধারণা ব্যাখ্যা করার জন্য আমেরিকান স্পোর্টস জার্নালে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি সক্ষমতার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যথা-

  1. বংশগতি অনুযায়ী শারীরিক স্বাস্থ্য
  2. দৈনন্দিন জীবনযাপন ও বিপদকালীন অবস্থায় প্রয়োজনীয় শক্তি, দম সমন্বয় ক্ষমতা ও কৌশল
  3. প্রাত্ত্বিক জীবনের প্রয়োজনীয় কাজকর্মের প্রতি যথাযথ মনোযোগ ও মূল্যবোধ।
  4. আধুনিক জীবনযাত্রার জটিলতা থেকে চাপ মুক্ত হওয়ার জন্য প্রয়োজন আবেগিক ভারসাম্য।
  5. দলের সাথে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা এবং সমাজ জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় সামাজিক চেতনা। 
  6. চলার পথে উদ্বত্ত সমস্যা বলি সুষ্ঠ্য সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান বৃদ্ধি ও বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা।
  7.  দেশের দায়িত্বশীল নাগরিকের কর্তব্য পালনের জন্য  নৈতিকতা ও চারিত্রিক দৃঢ়তা।

শারীরিক সক্ষমতা এর গুরুত্ব

সুতরাং সক্ষমতা বলতে ব্যক্তির সামগ্রিক সামর্থক কে বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সক্ষমতা মানুষের ব্যক্তি সামগ্রিকতা ধারণার উপর প্রতিষ্ঠিত। সামগ্রিক সক্ষমতার বিভিন্ন দিকের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বাস্তব, প্রয়োজনীয় এবং প্রাথমিক দিক হলো শারীরিক সক্ষমতা। সক্ষমতার এই দিক যৌগিক অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আবশ্যক। শারীরিক সক্ষমতা হলো শারীরিক কাজকর্ম করার সামর্থ্য। সুতরাং দৈহিক কাজের ভিন্নতা অনুসারে শারীরিক সক্ষমতার স্বরূপ বদলায়। সেজন্য দৈনন্দিন জীবনে হাঁটা,চলা,বসা ও অন্যান্য কাজের জন্য শারীরিক সক্ষমতা এবং একজন খেলোয়াড়ের শারীরিক ক্ষমতা এক নয়।

ক্রিয়া ভেদে শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের ব্যায়াম

ক্রিয়া ভেদে ব্যায়ামের ভিন্নতা রয়েছে। সব খেলার জন্য একই ধরনের ব্যায়ামের প্রয়োজন হয় না। কোন খেলায় হাতের শক্তি যেমন প্রয়োজন হয় তেমনি কোন খেলায় পায়ের শক্তির বেশি প্রয়োজন হয়। সংশ্লিষ্ট খেলার সাথে প্রয়োজনে ব্যায়াম করা হলো ওই খেলায় ভালো ফল আশা করা যায়। যেমন-

ফুটবল: খেলা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় শক্তি, দম ও  ক্ষিপ্রতার। সুতরাং যারা ফুটবল খেলবে তাদেরকে শক্তি ও দম বাড়ানোর ব্যায়াম বেশি করতে হবে।

সাঁতার: যারা সাঁতারু তাদের হাত, পায়ের শক্তি ও দম বাড়ানোর ব্যায়াম বেশি করতে হবে।

বাস্কেটবল: যে সমস্ত শিক্ষার্থী বা খেলোয়াড় বাস্কেটবল খেলায় অংশগ্রহণ করবে তাদের দম,  ক্ষিপ্রতারও পায়ের শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম এর উপর জোর দিতে হবে।

আরো পড়ুন: বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু ঋণ কত এবং এটা কিভাবে হলো

ভলিবল: ভলিবল খেলোয়াড়দের হাতের শক্তি একটু ভালো হলে স্ম্যাশ করতে সুবিধা হয়।  সেজন্য হাতের শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম করা উচিত।

হ্যান্ডবল: হ্যান্ডবল খেলোয়াড়দের হাত, পা ও ক্ষিপ্রতার বেশি প্রয়োজন হয়। সেজন্য হাত ও পায়ের শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম এবং ক্ষিপ্রতা বাড়ানোর ব্যায়াম করা প্রয়োজন।

কাবাডি: খেলাকে আমরা বলি শক্তির খেলা। শুধু শক্তি হলেই কোন খেলায় ভালো করা যায় না। কাবাডি খেলায় হাতের শক্তি ও  ক্ষিপ্রতার বেশি প্রয়োজন। বয়স অনুযায়ী বিভিন্ন খেলায় বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সক্ষমতা প্রয়োজন রয়েছে।

বয়স ও লিঙ্গ ভেদে শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের ব্যায়াম

বয়স এবং লিঙ্গ ভেদে শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের বিভিন্ন রকম মাধ্যম রয়েছে বিভিন্ন বয়স এবং বিভিন্ন লিঙ্গের ক্ষেত্রে বিভিন্ন রকম ভাবে শারীরিক সক্ষমতা অর্জন করা যায়। তা নিম্নরূপ-

বয়সভেদে: শারীরিক শিক্ষা সকল বয়সের লোকদের জন্য প্রযোজ্য। তবে বয়স ভেদে শারীরিক শিক্ষার কার্যক্রম ভিন্নতর হয়ে থাকে। শুধু ব্যায়ামই নয়, খাবার, পছন্দ অপছন্দ, শারীরিক ক্ষমতা ইত্যাদি ও ভিন্নতর হয় যেমন-শিশুদের শারীরিক সক্ষমতা বড়দের মত নয়। তাই তাদের সক্ষমতা অর্জনের জন্য খেলার ছলে ব্যায়াম, এই কথা মাথায় রেখে ব্যায়াম তথা খেলাধুলা নির্বাচন করতে হবে। 

 যেমন-ব্যাঙের মতো লাফাও, দৌড়ে ওই দেওয়াল ছুঁয়ে আসো, কাকের মত লাফাও বা অন্য কোন সিক্ত বিনোদনমূলক খেলাধুলার মাধ্যমে শারীরিক যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। কিশোরদের জন্য কিছুটা নিয়মমাফিক ব্যায়াম ও খেলাধুলা নির্বাচন করতে হবে। এক লাইনে দাঁড়ানো, হাত বা পায়ের ব্যায়াম করা, বল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করা, ছোয়াছুয়ি খেলা এ জাতীয় ব্যায়াম বা খেলা নির্বাচন করে শারীরিক যোগ্যতা অর্জন করতে হবে। তবে শিশুও কিশোরদের ভরোত্তোলন জাতীয় কোন কঠিন ব্যায়াম করানো যাবে না। এতে শরীরের উন্নতির চেয়ে ক্ষতি হবে।

আরো পড়ুন: মহানবী হযরত মুহাম্মদ ( সঃ) এর আদর্শ ও জীবনচরিত্র

লিঙ্গভেদে: শারীরিক শিক্ষা সকলের জন্য সমান হলেও বাস্তবে কতটুকু তাপ প্রয়োগ করা যায় এটাই আমাদের বিবেচ্য বিষয়। শারীরিক শিক্ষা পুরুষ ও মহিলাদের জন্য পৃথক হলেও শিশু বয়সে ছেলে ও মেয়েদের খেলাধুলা ও ব্যায়ামের পৃথক করা যায় না। শারীরিক গঠনের ক্ষেত্রে কেমন পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় না। শিশুদের জন্য শারীরিক শিক্ষা কার্যক্রম তৈরীর ক্ষেত্রে আনন্দদায়ক খেলাধুলা, অনুকরণমূলক হাটা, লাখ ও দৌড়াদৌড়ি ইত্যাদির উপর প্রাধান্য দেওয়া হয়। 

শিশুদের শারীরিক গঠন ও শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের জন্য খেলাধুলার মাধ্যমে শারীরিক শিক্ষার কার্যক্রম তৈরি করা উচিত, যাতে শিশুর মনের বিকাশ সাধন হয়। কিশোর বয়সে অর্থাৎ সাত থেকে বার বছর বয়সে ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে সমান পার্থক্য দেখা যায়। মেয়েরা তখন ভারী কোন খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারে না। ছেলেরা দলগত খেলার দিকে ঝুকে পড়ে বেশি তবে ব্যক্তিগত খেলাধুলায় ছেলে মেয়ে উভয়েই অংশগ্রহণ করতে থাকে। যেমন-ব্যাডমিন্টন, টেবিল টেনিস, দৌড় ইত্যাদি। এ সময় থেকে এই ছেলে মেয়েদের শারীরিক সক্ষমতার জন্য শারীর শিক্ষা কর্মসূচি পৃথক করতে হয়। বয়সন্ধিকালে ছেলে-মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তন দেখা দেয়।

বয়স ও লিঙ্গ ভেদে শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের ব্যায়াম

 এ কারণে তাদের কার্যক্রম ভিন্নতর হতে থাকে। ছেলেরা দলগত খেলার সাথে সাথে একক খেলা যথা-অ্যাটলেটিক্স, সাঁতার ইত্যাদি খেলা পছন্দ করে। অধিকাংশ ছেলেরা সাহসিকতা ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করতে দ্বিধা করে না। মেয়েদের শারীরিক পরিবর্তনের ফলে আচরণে সংকোচ ও লজ্জা ভাব দেখা যায়। সেজন্য শারীরিক শিক্ষার কার্যক্রম আলাদা হয়ে থাকে। খেলাধুলার ক্ষেত্রে যে সমস্ত প্রতিযোগিতা হয় যেমন-সাঁতার অ্যাথলেটিক্স ব্যাডমিন্টন টেবিল টেনিস প্রগতি ছেলে ও মেয়েদের জন্য পৃথকভাবে করা হয়। ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে শারীরিক শক্তি ক্ষেত্রে পার্থক্য থাকায় শারীরিক শিক্ষা কার্যক্রম ভিন্ন হয়।

শারীরিক সক্ষমতায় ব্যায়ামের প্রভাব

শারীরিক সক্ষমতার জন্য ব্যায়াম অপরিহার্য। ব্যায়াম না করলে কখনো শারীরিক সক্ষমতা অর্জন সম্ভব নয়। সেজন্য সব বয়সের মানুষের নিয়ম মোতাবেক নির্দিষ্ট ব্যায়াম করা প্রয়োজন। ব্যায়ামের প্রভাবে শরীরের ভিতর বিভিন্ন রকম পরিবর্তন হয় শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধির সহায়তা করে। ব্যায়ামের শরীরের ভিতরে যে পরিবর্তন হয় তা নিম্নরূপ-

হৃৎপিন্ডের পেশী শক্তিশালী হয়: খেলাধুলা বা ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত চলাচল বেড়ে যায় ফলে শারীর সক্ষমতা অর্জনে বিভিন্ন কলা কৌশল বৃদ্ধির ব্যায়াম হৃৎপিন্ডের কর্মক্ষমতা ও বৃদ্ধি পায়। কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে হৃৎপিন্ডের পেশী শক্তিশালী ও নীরোগ হয়। এরূপ হৃৎপিন্ডে কে অ্যাটলেটিক হার্ট বলে।

হৃৎপিন্ডের রক্ত সঞ্চালন করার ক্ষমতা বাড়ে: একজন সাধারণ মানুষের হৃৎপিন্ডে প্রতি মিনিটে 130 মিলিমিটার রক্ত সঞ্চালন করে। খেলাধুলা বা ব্যায়াম করার সময় রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে হৃৎপিন্ডের সঞ্চালন করার ক্ষমতা বেড়ে যায়। এতে হৃৎপিন্ডে সবল ও কর্মক্ষম হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

পালস রেট বৃদ্ধি পায়: একজন সাধারণ মানুষ পরিশ্রম করলে তার পালস রেট বেড়ে যায়। পুনরায় স্বাভাবিক হতে অনেক সময় লাগে। ফলে ক্লান্তি সহজে দূর হয় না। অপরদিকে একজন ভালো খেলোয়াড় যখন খেলাধুলা ব্যায়াম করে তখন তার পালস রেট বেশি বাড়েনা এবং দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে আসে। ফলে তার ক্লান্তি তাড়াতাড়ি দূর হয়।

রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়: খেলাধুলা বা ব্যায়াম করলে শরীরে রক্ত চলাচল বেড়ে যায়। ফলে সাধারণ মানুষের চেয়ে খেলোয়াড়দের মাংসপেশী,হৃৎপিন্ডে ইত্যাদি কর্ম ক্ষমতা বৃদ্ধি ও সবল হয়।

শারীরিক সক্ষমতা অর্জনে বিভিন্ন কলা কৌশল বৃদ্ধির ব্যায়াম

ব্যায়াম করার আগে প্রত্যেকের নিজ দেহ সম্পর্কে জ্ঞান থাকা দরকার। স্বাস্থ্য রক্ষার প্রয়োজনে এই জ্ঞান আরো জরুরী। প্রত্যেকেরই শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ পতঙ্গ ও তন্ত্র গুলো সম্পর্কে ধারণা থাকলে অঙ্গের উন্নতির জন্য নির্দিষ্ট ব্যায়াম বেচে অনুশীলন করা যায়। মাংসপেশির গতি সঞ্চালনের জন্য ৫ ধরনের শারীরিক সক্ষমতার দ্বারা শরীরকে উপযুক্ত করে গঠন করা যায়। যেমন-

শক্তি: শক্তি বলতে হাতের মাংসপেশীর উন্নতির মাধ্যমে হাতের শক্তি বৃদ্ধি করাকে বোঝায়। হাতের শক্তি বৃদ্ধি করার কয়েকটি ব্যায়াম উল্লেখ করা হলো-

  1. ডাম্বেল হাত দিয়ে ধরে উপরে উঠানো ও নামানো
  2. মাটিতে দুই হাত কাঠ বরাবর ফাক রেখে পুশ আপ। আস্তে আস্তে এক পা অপরের দিকে তুলে পুশ আপ।
  3. মেডিসিন বড় ছোড়া
  4. মাল্টি জিমে বিভিন্ন প্রকার হাতের ব্যায়াম করা

গতি: গতি বলতে দ্রুততা বোঝায়। যে যত বেশি দ্রুত তার সাথে যেতে পারে তার গতি বেশি বলে ধরা হয়। গতি বৃদ্ধির জন্য পায়ের মাংসপেশি শক্তি বাড়ানোর ব্যায়াম করা প্রয়োজন। যেমন-

  1. চিৎ হয়ে শুয়ে পায়ের পাতার ওপর ভর দিয়ে পা উপরে উঠানামা করতে হবে।
  2. জিমনেসিয়ামে পা দ্বারা লোহার ভর কে ঠেলে ভিতরে ও বাইরে নিতে হবে।
  3. ২৫ মিটার, ৫০ মিটার দৌড় বারবার অনুশীলন করতে হবে।
  4. ট্রেডমিলের ওপর দাঁড়িয়ে দৌড় অনুষ্ঠান করতে হবে।
  5. বালির মধ্যে কিছুক্ষণ দৌড়ালে মাংসপেশী সবল হয়।

আরো পড়ুন: সুস্থ দেহ ও জীবন যাপনে শারীরিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা

দম : সব খেলার জন্য দম প্রয়োজন। তবে ফুটবল, লম্বা দৌড়, ম্যারাথন, বাস্কেটবল এই খেলাগুলোতে দম সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। দম বাড়ানোর ব্যায়াম হলো-

  1. ধীরে ধীরে দৌড়, তবে বেশি সময় ধরে দৌড়াতে হবে।
  2. উঁচু নিচু জায়গা দিয়ে বা অসমতল জায়গা দিয়ে দৌড়াতে হবে।
  3. প্রথম দিন এক কিলোমিটার, তৃতীয় দিন দেড় কিলোমিটার তার সপ্তম দিন দুই কিলোমিটার এভাবে দূরত্ব বাড়িয়ে দৌড়াতে হবে।

শারীরিক সক্ষমতা অর্জনে বিভিন্ন কলা কৌশল বৃদ্ধির ব্যায়াম
ক্ষিপ্রতা : শরীরের ভারসমু বজায় রেখে অল্প জায়গার মধ্যে কে কত দ্রুততার সাথে কাজ করতে পারে তাকে ক্ষীপ্রতা বলে। যেমন-

  1. দ্রুত দৌড়ে যাওয়া ও বাঁশির সংকেতে থামা
  2. দশ মিটার দৌড় অত্যন্ত তীব্রতার সাথে দৌড় দিয়ে দাগ হয়ে আসা বা যাওয়া। এভাবে সময় ধরে দৌড় অনুশীলন করতে হবে।
  3. 20 লিটার দৌড়ের জন্য দুই মিনিট সময় নির্ধারণ করতে হবে। এই সময়ের মধ্যে কে কতবার দৌড়াতে পারে না জেনে যে ভালো করেছে সে বিজয়ী এভাবে পায়ের শক্তি বৃদ্ধি পাবে।

নমনীয়: শরীরের নমনীয়তা বৃদ্ধি করার জন্য এই শারীরিক ব্যায়ামগুলো করতে হবে যেমন-

  1. একটি উঁচু বেঞ্চের উপর দাঁড়িয়ে পা সোজা রেখে শরীর বাকিয়ে দুহাত কানের সাথে রেখে আস্তে আস্তে সামনের দিকে সরির বাঁকাতে হবে। যার শরীর যত বেশি বাঁকা হবে তার নমনীয়তা তত বেশি। 
  2. চিত হয়ে শুয়ে দুই কানের কাছে দুই হাত রেখে হাঁটু ভাঁজ করে শরীর উপরের দিকে তোলা ও নামানো।
  3. মাটিতে বসে দু পা সামনে সোজা করে রেখে দুহাত কানের সাথে লাগিয়ে পায়ের আঙ্গুল ছোঁয়ার চেষ্টা করা।

উপসংহার

আমরাও উপরোক্ত বিষয় হতে জানলাম সুস্থ জীবন যাপন করার ক্ষেত্রে শারীরিক সক্ষমতার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা। বিভিন্ন রকম শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের জন্য যে সকল ব্যায়াম করার প্রয়োজন সে সফল ব্যায়ামের বিস্তারিত। শারীরিক সক্ষমতা অর্জনের জন্য আমাদের এ সকল ব্যায়াম করা প্রয়োজন। আমরা যদি নিয়মিত এই সকল ব্যায়াম অনুশীলন করি তাহলে আমাদের শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। এবং আমরা সকল কাজে মনোযোগী হতে পারব এবং আমাদের কাজকর্মে বিজয় লাভ করব।

No comments:

Post a Comment