ফাস্টফুড কাকে বলে? ফাস্টফুড খাবারের তালিকা- তৈরি নিয়মাবলী
ফাস্টফুড খাবার বলতে যে খাবার অতি দ্রুত তৈরি করা সম্ভব এমন জাতীয় খাবারকেই ফাস্টফুড খাবার বলা হয়। এছাড়াও যে জাতীয় খাবার হাল্কা নাস্তার করার জন্য তৈরি করা হয় অল্প সময়ের মধ্যে সে সকল খাবারকেই ফাস্টফুড খাবার বলে থাকে। আমরা নিত্যদিন চলাফেরার ক্ষেত্রে অনেক সময় গ্রামে এবং শহর অঞ্চলে অনেক ফাস্টফুড খাবারের দোকান দেখি।
এই খাবারগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মুখোরচোক হয়। এবং এ
খাবার গুলো খুবই স্বল্পমূল্যে পাওয়া যায়। অনেক সময় আমরা হালকা নাস্তার
ক্ষেত্রে সকালে বা বিকেলে বিভিন্ন রকম ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খেয়ে থাকে। বিভিন্ন
রকম ফাস্টফুড খাবার এর দাম এবং তৈরির নিয়মাবলী বিভিন্ন রকম। আমরা অনেকেই বাড়িতে
এসব খাবার তৈরি করে খাই।
পোস্ট সূচীপত্র: ফাস্টফুড কাকে বলে? ফাস্টফুড খাবারের তালিকা তৈরি- নিয়মাবলী
- ভূমিকা
- ফাস্টফুড খাবারের তালিকা কি
- ফাস্টফুড খাবারের ক্ষতিকর দিক
- ফাস্টফুডে রয়েছে পাঁচটি মারাত্মক রোগের ঝুঁকি
- উপসংহার
ভূমিকা
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে অথবা বিকেলে নাস্তায় আমরা অধিকাংশ সময়ই বিভিন্ন রকম ফাস্টফুড খাবার খেয়ে থাকি। কেননা এ সকল খাবারগুলো তৈরি করতে খুব অল্প সময় লাগে এবং খুব সহজে তৈরি করা যায়। এছাড়াও এসব খাবার খুবই স্বাদযুক্ত হয়ে থাকে যে কারণে আমরা এই খাবারগুলো অতিরিক্ত বা বেশি পরিমাণে খেয়ে থাকে। অনেক সময় বাহিরে খাবারের কথা উঠলেই সাধারণত আমরা এই ফাস্টফুট জাতীয় খাবার গুলো খেয়ে থাকে।
কিন্তু এ সকল খাবারে রয়েছে বিভিন্ন প্রকারের ক্ষতিকার দিক যেগুলো আমাদের
শরীরে বিভিন্নভাবে ক্ষতি করতে পারে। এসব খাবার প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসম্মত নয়
বিভিন্ন প্রকার রোগ জীবাণু অথবা বিভিন্ন রকমের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হয়ে
থাকে বাইরে তৈরি খাবারগুলো। তবুও যদি বাসায় যে সকল ফাস্টফুড জাতীয় খাবার তৈরি
করা হয় এ সকল খাবার স্বাস্থ্যসম্মত নয় এ কারণে যে এ সকল খাবারে পরিষ্কার থাকলেও
এ সকল কোন জাতীয় খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
আরো পড়ুন: ঘুমের ওষুধ খাওয়ার উপকারিতা এবং অপকারিতা কি
ফাস্টফুড খাবারের তালিকা কি-খাবার তৈরীর প্রক্রিয়া
বেগুনি: বেগুনি সাধারণত বেগুনের তৈরি চপ কে বলা হয়। বেগুণী তৈরির জন্য
বেগুন কেটে পিস পিস করে নিতে হয় এবং এগুলো বেসনে তৈরি এবং ময়দা দিয়ে তৈরি করা
পাতলা করে মিশ্রণে চুবিয়ে তেলে ভাজতে হয়। এ খাবারটি আমাদের সকলেরই খুব
প্রিয় একটি মুখরোচক খাবার এবং এটি ফাস্টফুড খাবারের তালিকার মধ্যে পড়ে। তবে এই
খাবারটির একটু প্রতিক্রিয়া রয়েছে যেমন এটি খাবারের পরে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা
বেশি থাকে।
আলুর চপ: আলু সিদ্ধ করে ভর্তা করে তৈরি করে সেই ভর্তা বেসনের তৈরি
মিশ্রণের সঙ্গে চুবিয়ে তেলে ভেজে তৈরি করা হয়। এই চপ তৈরিতে আলু বেসনের
পাশাপাশি আরও অন্যান্য মসলা প্রয়োজন হয় যেমন ময়দা, মরিচ, খাবার সোটা এগুলো
দিয়ে এই চপ তৈরি করা হয়। এই চপটি মুখরচোখ খাবারের তালিকায় বা ফাস্টফুড খাবারের
তালিকায় রয়েছে তবে এই খাবারেও রয়েছে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। বাইরে যদি এই
খাবারটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হয় বা খাওয়া হয় তাহলে বিভিন্ন রকম
পেটের সমস্যা হতে পারে।
পেঁয়াজু: আমাদের সকলের খুব পছন্দের একটি খাবার পিয়াজু। ফাস্টফুড খাবারের
তালিকায় এই খাবারটিও রয়েছে তবে এই খাবারটি তৈরি প্রক্রিয়া একটু ভিন্ন রকম হলেও
এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনেকটা একই রকম। মুখরোচক খাবারের তালিকায় এই খাবারটি
থাকায় আমরা আনায়াসে খাবারটি পছন্দ করে থাকি। এই খাবারটি তৈরিতে প্রয়োজন হয়
ডাল এবং পেঁয়াজ এছাড়াও রয়েছে মরিচ বেসন এগুলো দিয়ে এই খাবারটি তৈরি করা হয়।
এই খাবারটি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করে বা খেলে নানা রকম সমস্যা দেখা
দিতে পারে।
সিঙ্গারা: এই খাবারটি আমাদের সকলের পরিচিত একটি খাবার। এবং আমাদের নাস্তার
পছন্দের একটি খাবারে তালিকায় এই খাবারটি রয়েছে। এছাড়াও ফাস্টফুড খাবারের
তালিকায় তো এই খাবারটি সবার ঊর্ধ্বে। রেস্টরেন্ট অথবা ফাস্টফুডের দোকানে এ
খাবারটি থাকবেই। এই খাবারটি তৈরিতে প্রয়োজন হয় ময়দা এবং আলু বা আলুর
তরকারি এগুলো মিশ্রণে সুন্দর প্রক্রিয়া করে এই খাবারটি তৈরি করা হয়।
ফুচকা: বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় ফাস্টফুড খাবারের মধ্যে ফুচকা রয়েছে।
এই খবরটি যদিও মেয়েদের সবচাইতে পছন্দের একটি খাবার। তবে এই খাবারটি তৈরিতে বেশ
অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ রয়েছে। এই খাবারটি অধিকাংশ মানুষ খাবার পরে বিভিন্ন রকম
পেটের সমস্যা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চটপটি: ডালের তৈরি এই খাবারটি বেশ জনপ্রিয় এবং ফাস্টফুড খাবারের তালিকায় রয়েছে এই খাবারটি। তবে এই খাবারটি রাস্তার সময় না হয়ে অধিকাংশ সময় আমরা বাহিরে বেড়াতে যাওয়ার সময় বা বাইরে বেড়াতে গেলে দূরে কোথাও আড্ডা দেওয়ার সময় এই খাবারটি খেয়ে থাকি।
এছাড়াও বড় বড় রেস্টুরেন্ট অথবা হোটেলে গেলে পাওয়া যায় বার্গার, পিজ্জা,
চিকেন ফ্রাই, চিকেন তান্দুরি, গ্রিল, কেএফসির অরজিনাল রেসপি চিকেন,ইতালিয়ান
বিএমটি, সহ আরো বিভিন্ন রকমের ফাস্টফুড জাতীয় খাবার রয়েছে যেসকল খাবার ফাস্ট
ফুড জাতীয় খাবারের তালিকায় রয়েছে সে সকল খাবারগুলো আমাদের শরীরে বিভিন্নভাবে
ক্ষতি করে আসছে কিন্তু আমরা মুখরোচক খাবার বলে এই খাবারগুলো আমাদের খাবার তালিকা
থেকে বাদ দিতে পারি না।
আরো পড়ুন:কেন শসা খাবেন এবং এর প্রয়োজনীয়তা কি
ফাস্টফুড খাবারের ক্ষতিকর দিক
খাবারে রয়েছে বিভিন্ন প্রকার ক্ষতিকর দিক। এ সকল খাবার আমাদের মুখরোচ্চু খাবার
বলে আমরা এ সকল খাবার কে আমাদের খাবার তালিকা হতে বাদ দিতে পারি না। কিন্তু
আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে হলে এ সকল খাবার থেকে দূরে থাকতে হবে। কেননা এ সকল খাবার
রয়েছে বিভিন্ন রকমের রোগ তৈরি প্রক্রিয়া। যা আমাদের দেহে বিভিন্ন রকমের রোগ
তৈরি করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে। এ সকল খাবারের কারণে
গ্যাস্টিক সহ বিভিন্ন রকম পেটের সমস্যা দেখা দেয়। পেট ব্যথা পেট যে জ্বালাপোড়া
করা গ্যাস্টিকের সমস্যা সহ অনেকের অনেক সময় সকল খাবার খাওয়ার কারণে ডায়রিয়া
পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়াও এ সকল খাবারে রয়েছে আরও গুরুত্বপূর্ণ রোগ তৈরি হওয়ার
সম্ভাবনা। এ কারণে আমাদের শরীর সুস্থ রাখতে হলে অবশ্যই এ সকল খাবার হতে নিজেকে
গুছিয়ে রাখতে হবে।
ফাস্টফুডে রয়েছে পাঁচটি মারাত্মক রোগের ঝুঁকি
ফাস্টফুট জাতীয় খাবার খাওয়ার কারণে আমাদের বিভিন্ন রকম সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে
বিগত দিনে। তবে আমাদের হয়তো বা ধারণা নেই যে এ সকল খাবার থেকে আমাদের বড় ধরনের
রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফাস্টফুড খাবার হতে যে পাঁচটি মারাত্মক রোগ হওয়ার
সম্ভাবনা রয়েছে তা নিম্নরূপ
ক্যান্সার: ফাস্টফুট জাতীয় খাবারে কারণে যে কোন সময় যে কোন ব্যক্তির এই
রোগ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কেননা ফাস্ট ফুডে থাকা অতিরিক্ত শর্করা যা
প্রক্রিয়াজাত মাংস ক্যান্সারে ঝুঁকিতে বাড়িয়ে দেয় 2018 সালের এক গবেষণায়
দেখা গেছে যারা অতিরিক্ত পরিমাণে ফাস্টফুট জাতীয় খাবার খেয়ে থাকেন তাদের
ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা ১২% বেড়ে গেছে।
টাইপ-২ ডায়াবেটিকস: অতিরিক্ত পরিমাণ পাসপোর্ট জাতীয় খাবারের কারণে টাইপ টু ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয় কেননা এ সকল খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট যা আপনার শরীরে রক্তের শর্করা সঠিকভাবে পরিচালনা করতে বাধা দেয় যা ইন্সুলেশন প্রতিরোধ বিকাশে বাধা সৃষ্টি করে একটি 15 বছরের গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা সপ্তাহে দুইবারের বেশি এ সকল খাবার গ্রহণ করে তাদের ইন্সুলেশন বিকাশে ঝুঁকি দ্বিগুণ মাত্রায় বাড়িয়ে তোলে।
উচ্চ রক্তচাপ: ফাস্ট ফুড জাতীয় খাবারের রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ফ্যাট চর্বি
যার শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এ সকল খাবার গ্রহণের কারণে অনেক সময় উচ্চ
রক্তচাপ তৈরি হতে পারে। এবং উচ্চ রক্তচাপ হতে আরো মারাত্মক কিছু ঘটতে পারে।
বীপাকিয় সিনড্রোম: নিয়মিত ফাস্টফুড জাতীয় খাবার অথবা সোডা পানীয়
আপনার মেটাবলিক সিনড্রোম হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে কয়েক গুণ। কেননা
এ সকল খাবারে রয়েছে বিভিন্ন পরিমাণ ফ্যাট যা শরীরের উচ্চ রক্তচাপ ও উচ্চ শর্করা
তৈরি করতে পারে এতে কোমরের পরিধি বৃদ্ধি পায় এবং হৃদরোগ ডায়াবেটিক্স ও
ডিমেনশিয়াল ঝুঁকি অনেক গুণ বাড়িয়ে দেয়।
হৃদরোগ: ফাস্টফুড জাতীয় এ সকল খাবারগুলো আপনার শরীরে হৃদরোগ তৈরির
সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে। এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে কয়েক গুণ বেশি
কারণ এ সকল খাবার রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। আমেরিকার
এক গবেষণা দেখা গেছে একজন মানুষ প্রতিদিন প্রায় ১৩ গ্রাম ফ্যাট গ্রহণ করতে পারে
কিন্তু একটি বার্গার রে প্রায় ১৪ গ্রাম ফ্যাট রয়েছে যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।
আরো পড়ুন:করোলা খাওয়ার উপকারিতা ও প্রয়োজনীয়তা
উপসংহার
উপরোক্ত বিষয় হতে আমরা এটুকু জানতে পেরেছি ফাস্টফুড খাবারের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক। যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রকম ভাবে ক্ষতি করে থাকে। এবং হয়তোবা আমাদের জানার বাইরে ছিল ফাস্টফুড খাবারের খাওয়ার ফলে যে বড় ধরনের পাঁচটি রোগ হতে পারে। যা আমাদের যেকোনো বয়সের বা যে কোন মানুষের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ কারণে আমরা
অবশ্যই চেষ্টা করব এই সকল জাতীয় খাবার হতে নিজেকে বিরত রাখা। তাহলেই আমরা সুস্থ
সবল জীবন যাপন করতে সম্ভব হব। তবুও ফাস্টফুট জাতীয় খাবার গুলো খাওয়ার কারণে
অনেক সময় আমরা এ সকল খাবার হতে নিজেকে বিরত রাখতে ব্যর্থ হই। কিন্তু সুস্থ জীবন
যাপন করার জন্য অবশ্যই আমাদের এ সকল বিষয়ে মাথায় রেখে চলাফেরা করা উচিত। ফাস্ট
ফুড খাবারের বিকল্প খাবার আমরা খেতে পারি।
No comments:
Post a Comment