এসিডের সঠিক ব্যবহার এবং অপব্যবহার - M.A IT FIRM

এসিডের সঠিক ব্যবহার এবং অপব্যবহার

 এসিডের সঠিক ব্যবহার এবং অপব্যবহার

আমরা জানি এসিড গুলো পানিতে হাইড্রোজেন আয়ন তৈরি করে। তবে মজার ব্যাপার হলো কিছু কিছু এসিড বিশেষ বিশেষ করে জৈব এসিড গুলো কিন্তু পানিতে পুরোপুরি ভাবে বিয়োজিত না হয়ে আংশিকভাবে বিয়োজিত হয়। 

এসিডের সঠিক ব্যবহার এবং অপব্যবহার

অর্থাৎ যতগুলো এসিডের অণু থাকে তার সবগুলো হাইড্রোজেন আয়ন তৈরি করে না। সেজন্য এই এসিড গুলোকে দুর্বল অ্যাসিড বলে। পক্ষান্তরে খনিজ এসিড গুলো পানিতে পুরোপুরি বিয়োজিত হয়ে হাইড্রোজেনের তৈরি করে। অর্থাৎ যতগুলো এসিডের অণু থাকে তার সবগুলোই বিয়োজিত হয়।

পোস্ট সূচিপত্র: এসিডের সঠিক ব্যবহার এবং অপব্যবহার

  • ভূমিকা
  • এসিডের অপব্যবহার, আইন কানুন ও সামাজিক প্রভাব
  • এসিড নিক্ষেপ করলে কি ধরনের শাস্তি হয়
  • পাঠস্থলিতে এসিডিটির কারণ ও সঠিক খাদ্য নির্বাচন
  • যে সব খাবারে বা ফলমূলে এসিড রয়েছে
  • উপসংহার

ভূমিকা

আমাদের অনেকেরই অজানা যে বোলতা বা বিচ্ছু ভুল ফোটালে প্রচন্ড জ্বালা যন্ত্রণা করে কেন এর কারণ হচ্ছে বোলতা এবং বিচ্ছুর হলে থাকে হিস্টামিন নামে এক ধরনের খারাপ পদার্থ। তাই তাই এসব ক্ষেত্রে জালা নির্ধারণের জন্য যে মলম ব্যবহার করা হয় তাতে থাকে ভিনেগার অথবা বেকিং সোডা যেগুলো এসিড কিংবা এসিড জাতীয়। 

 এগুলো ওই ক্ষারকের সাথে বিক্রিয়া করে সেগুলো নিষ্ক্রিয় করে ফলে জালা আর থাকে না। অনেক সময় মাংস পোলাও বিরিয়ানি এ ধরনের খাবার খাওয়ার পর কোন ধরনের কোমল পানিও পান করি। এটা কি আমাদের কোন কাজে আসে আসলে খাবার হজম করার জন্য আমাদের পাকস্থলীতে নির্দিষ্ট মাত্রার হাইড্রোক্লোরিক এসিডের প্রয়োজন হয়। ভাই এই মাত্রার হের ফের হলে আমাদের পরিপাকে অসুবিধা হয়। কোমল পানীয় গুলো অল্প মাত্রায় এসিডিক তাই গুরুপাক খাবার পর কোমল পানিও আমাদের পরিপাকে সাহায্য করে।

এসিডের অপব্যবহার, আইন কানুন ও সামাজিক প্রভাব

পৃথিবীর সকল সমাজেই এক দুইজন খারাপ নিষ্ঠুর চরিত্রের মানুষ থাকে আমাদের সমাজেও আছে। তারা নিজের প্রতিহিংসা মেটানোর জন্য মানুষের শরীরে অ্যাসিড ছুড়ে মারার মত ভয়ানক অপরাধ করতে পারে। মানুষের শরীর সম্পূর্ণ ঝলসে যায়। মুখমণ্ডলে এসিড শুনলে সেটি বিকৃতি আকার ধারণ করে। এ কারণে যারা এসিড সন্ত্রাসের শিকার হন তারা তাদের বিকৃত চেহারা নিয়ে জনসম্মুখে আসতে চায় না এমনকি অনেক ক্ষেত্রে তারা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

এসিডের সঠিক ব্যবহার এবং অপব্যবহার


এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যারা এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয় তাদের বেশিরভাগই স্কুল কলেজের ছাত্রী বা গৃহবধূ। এসিড সন্ত্রাসের কারণে এই সম্ভাবনাময় ও মেধাবী ছাত্রীদের পড়াশোনা সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। আবার এর শিকার হলে পুরো পরিবারের নেমে আসছে জীবন। তাই এসিড সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের স্বেচ্ছার হতে হবে এবং মানুষকে এই ব্যাপারে সচেতন করতে হবে।

এসিড নিক্ষেপ করলে কি ধরনের শাস্তি হয়

অ্যাসিড নিক্ষেপ করা একটি মারাত্মক অপরাধ । বাংলাদেশ নারী ও শিশু নির্যাতন আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী এসিড ছোড়ার শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। যে এসিড নিক্ষেপ করে সে একদিকে যেমন অন্যের জীবনটি ধ্বংস করে দিচ্ছে অন্যদিকে ও নিজের কঠোর শাস্তির হাত থেকে বাঁচাতে পারছে না। হয়তো বাকি জীবন জেলখানায় বন্দি জীবন কাটাতে হচ্ছে তাই আমাদের সব মানুষকে এসিড নিক্ষেপ এর ভয়াবহতার কথা বোঝাতে হবে যারা। যারা সাধারণ মানুষের কাছে এত সহজে এসিড বিক্রি করে তাদেরকেও সতর্ক করতে হবে কিংবা শাস্তি দিতে হবে। একই সাথে কেউ এসিড দিয়ে আক্রান্ত হলে তাকে কিভাবে প্রতিরক্ষা করতে হবে সেই ব্যাপারটি সবাইকে জানিয়ে দিতে হবে।

পাঠস্থলিতে এসিডিটির কারণ ও সঠিক খাদ্য নির্বাচন

পাকস্থলী খাদ্য হজম করার জন্য আমাদের সবার হাইড্রোক্লোরিক এসিডের প্রয়োজন হয় সেটি নিজে থেকে আমাদের পাকস্থলীতে তৈরি হয়। কোন কারণে যদি এই এসিডের মাত্রা বেড়ে যায় তখন সেই অবস্থা কি আমরা পাকস্থলীর এসিডিটি বলি। কখনো এবং কি কি কারণে পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ বেড়ে যায় নানা কারণে পাকস্থলীতে এসিডের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে খাদ্যদ্রব্য। আমরা যেসব পানীয় আর ফলমূল রস পান করি অম্লীয়। কাজেই এসব পানিও বেশি মাত্রায় পান করলে বা খালি পেটে পান করলে সেটা এসিডিটি সৃষ্টি করতে পারে। জাতীয় পানি গুলো পাকস্থলীতে এসিডিটি বাড়ায়।

 বিশেষজ্ঞদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পেঁয়াজ রসুন এবং অন্যান্য অতিরিক্ত মসলা দেওয়া খাবার চকলেট এগুলো অ্যাসিড তৈরির কারণ। খাদ্য ছাড়াও আরো কিছু কারণে এসিডিটি বেড়ে যেতে পারে এর মধ্যে একটি হলো দুশ্চিন্তা। নিয়মিত সময় মত খাবার না খাওয়া কিংবা প্রয়োজন মাফিক ঘুম না হলেও এসিডিটির হতে পারে। আবার কখনো কখনো ব্যাকটেরিয়া জাতীয় সংক্রমণের এসিডিটি হতে পারে। আমরা কিভাবে উপযুক্ত খাদ্য নির্বাচন করে এসিডিটির হাত থেকে রেহাই পাব এই বিষয়টি আমাদের জানা খুবই জরুরী। যেসব খাদ্যদ্রব্য বা পানির কারণে এসিডিটি হয় সেগুলো অতিরিক্ত গ্রহণ না করে পরিমিত পরিমানে গ্রহণ করতে হবে এবং প্রয়োজন হলে সাময়িকভাবে ওই খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। 
এসিডের সঠিক ব্যবহার এবং অপব্যবহার


mmmm

বেশ কিছু খাদ্য দব্য আছে যেগুলো কিছুটা ক্ষারধর্মী এবং ফলে এসিডিটি নিষ্ক্রিয় করতে পারে। ওইসব খাদ্যদ্রব্য গ্রহণ করে আমরা এসিডিটির হাত থেকে রক্ষা পেতে পারি। এসব খাদ্যের মধ্যে রয়েছে বেশিরভাগই শাকসবজি যেমন ব্লকলি, পুঁইশাক ,পালং শাক, গাজর, সিং, বিট, লেটুস পাতা ,মাশরুম ,ভুট্টা, আলু ,ফুলকপি ইত্যাদি। আবার কিছু কিছু খাদ্যশস্য আছে যেমন ডাল মিষ্টি কমাতে সাহায্য করে। দুধ জাতীয় খাবারের মধ্যে সয়া মাখন, ছাগলের দুধ থেকে তৈরি করা মাখন, সয়া দুধ, বাদাম দুধ,  এগুলো ক্ষারধর্মী যা এসিডিটি কমাতে পারে। নানা রকমের বাদাম হারবাল চা সবুজ চা আদা চা খেয়েও অতিরিক্ত এসিডিটি কমানো যায়।

যে সব খাবারে বা ফলমূলে এসিড রয়েছে

আমাদের অনেকেরই জানা রয়েছে যে লেবু, কমলা লেবু, আপেল, পেয়ারা, আমলকি ইত্যাদি নানারকম ফলের মাঝে আছে নানা রকমের জৈব এসিড, যেগুলো আমাদের খুবই প্রয়োজনীয়। আবার কিছু কিছু এসিড আছে যেগুলো রোগ প্রতিরোধ করে। যেমন ভিটামিন সি বা এসকরবিক অ্যাসিড। ভিটামিন সি ক্ষত সারাতে খুবই সয়ায়ক হিসেবে কাজ করে এবং আমাদের শরীরে এর অভাবে স্কার্ভি রোগ দেখা দিতে পারে। আম জলপাই ইত্যাদি নানা রকমের আচার সংরক্ষণের জন্য ভিনেগার বা অ্যাসিটিক এসিড ব্যবহার করা হয়। বিয়ে বাড়িতে দাওয়াত খাওয়ার পর বোরহানি বা দই খেলে কোন লাভ হয় । কোমল পানীয় বা দই খেলে এতে বিদ্যমান ল্যাকট্রিক এসিড হজমে সহায়তা করে।

উপসংহার

উপরোক্ত বিষয় হতে আমরা জানলাম কিভাবে এসিড নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে বা অ্যাসিড নিক্ষেপ কার এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে পারা যায় এবং একজন আক্রান্ত হওয়া ব্যক্তি তার জীবন যাপনে কি ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। এই বিষয়গুলো লক্ষ্য রেখে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞা করতে পারি যে এসিড নিক্ষেপ হতে আমাদের সমাজকে সচেতন করতে হবে এবং সমাজের উশৃংখল মানুষগুলোকে এই বিষয়ে জানাতে হবে যেন এরকম ধরনের কোন অপরাধ তাদের দ্বারা সমাজে না ঘটে এতে করে সমাজ এবং ব্যক্তি দুজনের জন্যই শাস্তিমূলক একটি সমস্যা সৃষ্টি হয়। হয়

No comments:

Post a Comment