প্রত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটির প্রভাব কি

ভার্চুয়াল রিয়েলিটি শব্দের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে কৃত্রিম বাস্তবতা, অর্থগতভাবে শব্দটি দুটি যদিও স্ববিরোধী কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে এটি এমন এক ধরনের পরিবেশ তৈরি করে যেটি বাস্তব নয় কিন্তু বাস্তবের মত চেতনা সৃষ্টি করে এবং মস্তিষ্কে একটি বাস্তব অনুভূতি জাগায়। আমরা জানি, স্পর্শ, শোনা কিংবা দেখা থেকে মানুষের মস্তিষ্কে একটি অনুভূতি সৃষ্টি হয় সেটাকে আমরা বাস্তবতা বলে থাকি।

কতগুলো গ্রন্থের সাহায্যে যদি আমরা এই অনুভূতিগুলো সৃষ্টি করতে পারি তাহলে অবস্থা কি মানুষের কাছে পুরোপুরি বাস্তব মনে হতে পারে। এটি নানাভাবে করা সম্ভব অনেক সময় বিশেষ ধরনের চশমা বা হেলমেট পড়া হয়, যেখানে তুই চোখে দুটি ভিন্ন দৃশ্য দেখিয়ে ত্রিমাতৃক অনুভূতি সৃষ্টি করা হয়। এই প্রক্রিয়াগুলো সম্পাদন করার জন্য মূলত কম্পিউটারের সাহায্য নিয়ে হার্ডওয়ার ও সফটওয়্যার এর সমন্বয়ে কোন একটি পরিবেশ বা ঘটনার বাস্তব ভিত্তিক শিক্ষা করা হয়।

পোস্ট সূচিপত্র:প্রত্যহিক জীবনে ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটির প্রভাব কি

• ভূমিকা
• বিনোদনের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটি
• যানবাহন চালানো এবং প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটি বৈশিষ্ট্য
  
• শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এগুলোর মূল্যায়ন
• চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটির প্রয়োজনীয়
• তা সামরিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটি
• ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল এবং রিয়ালিটি গুরুত্ব
• উপসংহার

ভূমিকা

ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটি আমাদের পরিবেশের উপরে মারাত্মকভাবে প্রভাব পড়ছে আমরা বর্তমানে অধিকাংশ সময়ে ভার্চুয়াল জীবন যাপন করছি। তাই বলা যায় ভার্চুয়াল রিয়েলে কি হলো হার্ডওয়ার ও সফটওয়্যার এর মাধ্যমে তৈরিকৃত এমন এক ধরনের কৃত্রিম পরিবেশ মনে হবে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি পরিবেশ তৈরির জন্য শক্তিশালী কম্পিউটারের সংবেদনশীল গ্রাফিক্স ব্যবহার করতে হয় সাধারণ গ্রাফিক্স আর ভার্চুয়াল জগতের গ্রাফিক্সের মধ্যে তফাৎ হল এখানে শব্দ এবং স্পর্শ কেউ যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়।

বিনোদনের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটি

নানা ধরনের বিনোদনের মাধ্যমে সাধারণ মানুষ ভার্চুয়ালিটির সাথে সবচেয়ে বেশি পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।  ত্রিমাত্রিক পদ্ধতিতে নির্মিত ভার্চুয়াল কল্পকাহিনী, পৌরাণিক কাহিনী, কার্টুন, ঐতিহাসিক চলচ্চিত্র ইত্যাদি মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। আজকালকার প্রায় প্রতিটি চলচ্চিত্রে ভার্চুয়ালিটির ব্যবহার দেখা যায়। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যবহার করে নানা ধরনের কম্পিউটারকে সাধারণ মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। মিউজিয়াম বা ঐতিহাসিক যেসব জায়গায় ভ্রমণ করা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি পদ্ধতি ব্যবহার করে সেসব জায়গায় ভ্রমণ করার অনুভূতি পাওয়া সম্ভব। সাম্প্রতিক সময়ে  অগমেন্টড রিয়েলিটি নামে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির একটি নতুন গ্রুপ জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করেছে, যেখানে বাস্তব জগতের সাথে ভার্চুয়াল জগতের এক ধরনের সংমিশ্রণ ঘটানো হয়।

যানবাহন চালানো এবং প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটি বৈশিষ্ট্য

ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সবচাইতে বাস্তবমুখী ব্যবহার হয়ে থাকে ফ্লাইট সিমুলেটরে যেখানে বেইমানি রা বাস্তবে আসল বিমান উন্নয়নের পূর্বেই বিমান পরিচালনার বাস্তব জগতকে অনুধাবন করে থাকে। এছাড়াও মোটর গাড়ি জাহাজ ইত্যাদি চালানোর প্রশিক্ষণের সংশ্লিষ্ট শিমুলেটর ও মডেলিং সফটওয়্যার এর  মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রশিক্ষণ সংশ্লিষ্ট কৃত্রিম পরিবেশ তৈরি করে বাস্তবের ন্যায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে। এতে করে পরবর্তীতে যখন একজন পাইলট অথবা নাবিক তার বাহন চালানোর সময় পূর্বের অভিজ্ঞতা থেকে যথেষ্ট পরিমাণ জ্ঞান অর্জন করেছে সেটা বাস্তব রূপে উপস্থাপন করতে পারে এবং এই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে এই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম হয়।

শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে এগুলোর মূল্যায়ন

বাস্তবে কোন কাজ করার আগে কম্পিউটারে কৃত্রিমভাবে প্রয়োগ করে দেখাতে শিমুলেশন বলা হয়। শিখন শেখানো কার্যক্রমে জটিল বিষয়গুলো ভার্চুয়ালিটির মাধ্যমে হিমুলেশন ও মডেলিং করে শিক্ষার্থীদের সামনে অল বুদ্ধ ও পিত্রা স্পর্শক ভাবে উপস্থাপন করা যায়। ফলাফল বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন, জটিল অনুর আণবিক গঠন, ডিএনএ গঠন যা কোন অবস্থাতেই বাস্তবে অবলোকন সম্ভব নয় সেগুলো ভার্চুয়ালিটির পরিবেশে হিমুলেশনের মাধ্যমে দেখানো সম্ভব।

চিকিৎসার ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটির প্রয়োজনীয়

চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরিসরে এর ব্যবহার ব্যাপক। জটিল অপারেশন, কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সংযোজন, ডিএনএ পর্যালোচনা ইত্যাদি সহ নবী ন চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ ও রোগ নির্ণয় ব্যাপক হারে ভার্চুয়ালিটি ব্যবহৃত হয়। এতে করে নবীন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসকরা নানারকম রোগ বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারে এবং সেই সঙ্গে বিভিন্ন প্রকার অপারেশন এবং জটিল রোগ নির্ণয় করতে সহজলভ্য সুবিধা দিতে সক্ষম হচ্ছে ভার্চুয়াল রিয়েলি।

সামরিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটি

টি ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে সত্যিকারের যুদ্ধক্ষেত্রের অবগত তৈরি করে সৈনিকদেরকে উন্নত ও নিখুঁত প্রশিক্ষণ প্রদান করা যায়। সত্যিকারের যুদ্ধকালীন বিপদজনক পরিস্থিতিতে সৈনিকেরা তাদের সঠিক করণীয় সম্পর্কে আগেই পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়ে থাকে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে তৈরিকৃত সামরিক প্রশিক্ষণ সামরিক যোদ্ধাদের পরবর্তী যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। এবং যোদ্ধারা পূর্বে থেকেই ভার্চুয়াল রিয়েলিটির মাধ্যমে বুঝতে পারে বা তারা এই ব্যাপারে ধারণা থাকে যে যুদ্ধক্ষেত্রে কি ধরনের সমস্যা হলে তার সমাধান কিভাবে করতে হবে। সামরিক প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে।

ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ভার্চুয়াল এবং রিয়ালিটি গুরুত্ব

উৎপাদিত কিংবা প্রস্তাবিত পণ্যের গুণগত মান, গঠন, বিপণন, সম্ভবত যাচাই, মূল্যায়ন, বিপণন কর্ম প্রশিক্ষণ ইত্যাদি সব ধরনের কার্যক্রমে ভার্চুয়াল রিয়েলিটির সিমুলেশন পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়। কোন বিপদজনক ও ক্ষতিকর দব্য বাজারজাত করার আগে কোন কর্মচারীর জীবনের ঝুঁকি না নিয়ে ভার্চুয়ালিটি পরিবেশে সেগুলো পরীক্ষা করে নেওয়া সম্ভব হয়। উল্লেখ্য বিষয় রয়েছে যে ভার্চুয়ালিটির অনেক বাস্তব ব্যবহার থাকার পরেও কম বয়সী বা শিশুদের বেলায় এর যথেষ্ট ব্যবহার নিয়ে সতর্ক থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে একজন প্রাপ্তবয়স্ক যেভাবে ভার্চুয়ালিটি পরিবেশের প্রতিক্রিয়া করে সে তুলনায় একজন কম বয়সি প্রতিক্রিয়া অনেক তীব্র এবং দীর্ঘস্থায়ী। শুধু তাই নয় এর যথেষ্ট ব্যবহার তাদের শিখন ক্ষমতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

উপসংহার

উপরোক্ত বিষয় হতে আমরা জানলাম আমাদের মুত্যাহিক জীবনে ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটির প্রভাব কতটুকু রয়েছে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ভার্চুয়াল এবং রিয়ালিটি তফাৎ এবং এর প্রয়োজনীয়তা কি এই বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি। আমাদের ভার্চুয়াল লাইফ এবং রিয়েলিটি লাইভ দুটি আলাদা আলাদা অবস্থান হলেও আমরা আমাদের ভার্চুয়াল এবং রিয়েলিটি লাইফকে একত্রিত করে আমাদের দৈনন্দিন জীবন যাপন পালন করছে।