কমলা গাছের যত্ন এবং পরিচর্যার পদ্ধতি
আপনি যদি কমলা গাছের সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারেন, তাহলে আপনার বাড়ির আশেপাশের খোলা জায়গায় কমলার চাষ করতে পারবেন। কমলালেবু চাষ করতে হলে অবশ্যই আপনাকে কমলা গাছের যত্ন নিতে হবে এবং সেইসাথে সঠিকভাবে পরিচর্যা করতে হবে।
কমলা গাছের যত্ন: উপস্থাপনা -কমলা গাছের পরিচর্যা
বর্তমানে বাংলাদেশে অনেকে কমলা বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন। আপনি যদি সঠিকভাবে কমলা গাছের পরিচর্যা করতে পারেন, তাহলে আপনিও বাণিজ্যিকভাবে কমলা গাছের বাগান দিয়ে লাভবান হতে পারবেন। অথবা আপনি যদি একটি আনাচে-কানাচে খোলা জায়গায় কমলা গাছ লাগাতে চান তাহলে সেটাও করতে পারেন।
কমলা গাছ লাগাতে হলে অবশ্যই আপনাকে বিশেষ কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। যেহেতু আপনি সঠিক পরিচর্যা বা যত্ন নিতে না পারলে, তাহলে গাছ ঠিকমত বাড়ে না এবং আপনি সঠিক ফল পাবেন না।
তাই কমলা গাছ লাগানোর আগে আপনার প্রয়োজন সঠিক পদ্ধতিতে কমলা চাষের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা। আসুন জেনে নেই কমলা গাছের পরিচর্যা, যত্ন, কমলা লেবু গাছের পরিচর্যা, টবে কমলা গাছের পরিচর্যা এবং কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।
কমলা লেবু গাছের পরিচর্যা-কমলা গাছের পরিচর্যা
কমলা চাষ করতে চাইলে অবশ্যই কমলা গাছের পরিচর্যা বা কমলা লেবু গাছের পরিচর্যা সম্পর্কে আপনাকে জানা উচিত। কারণ সঠিকভাবে কমলা গাছের পরিচর্যা বা কমলা লেবু গাছের পরিচর্যা করলেই কেবল মাত্র আপনি সেই গাছ থেকে ভালো ফলন আশা করতে পারেন। অন্যথায় আপনার সময় ও শ্রম পঁচাতে হবে।
কমলা গাছ লাগানোর পদ্ধতি: কমলা গাছ লেবুজাতীয় একটি উদ্ভীদ। মূলত কমলার বীজ থেকে যদি আপনি কমলার গাছ লাগাতে চান তাহলে সেই গাছ বড় হতে অনেক সময় নেবে এবং ফল ধরতে কত সময় লাগবে তা অনুমান করা সম্ভব নয়। প্রথমেই আপনি ভালো নার্সারি থেকে ভালো মানের কমলা লেবুর চারা নিয়ে লাগাতে হবে।
কমলা গাছ লাগানোর পূর্বে আপনাকে মাটি প্রস্তুত করতে হবে। সেই জন্য ৬০×৬০×৬০ সেন্টিমিটার গর্ত করতে হবে এবং গর্তে ১০ কেজি গোবর সার, ২০০ গ্রাম ইউরিয়া সার, ২০০ গ্রাম এমপিও এবং ৫০০ গ্রাম চুন প্রয়োগ করতে হবে। এরপরে আপনাকে ২০ থেকে ২৫ দিন অপেক্ষা করতে হবে। এরপর আপনি কমলা লেবুর চারা গুলো সেই গর্তে ভালভাবে লাগিয়ে দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পরিচর্যা করতে হবে।
কমলা গাছের জন্য সেচ খুবই গুরুত্বপূর্ণ, মাঝে মাঝে সেই গাছে সেচ দিতে হবে। আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, এই গাছটি সাধারণত বর্ষাকালে লাগালে ভালো হয় এবং গাছ মরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকেনা। তাই আপনি বর্ষাকালে গাছ লাগাবেন।
গাছের গোড়ায় প্রয়োজন অনুযায়ী সার দিতে হবে প্রত্যেকটি গাছে বছরে গড়ে ৪৫০ গ্রাম থেকে ৯০০ গ্রাম নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ করা উচিত এবং এর পাশাপাশি পটাশিয়াম ফসফরাস সহ অন্যান্য যুক্ত করা যেতে পারে। কমলা গাছগুলোকে মাঝে মাঝে ছাঁটাই করতে হবে এবং কাটা অংশগুলোতে ফাংগিসাইড লাগিয়ে দিতে হবে।এই মতে কমলা গাছের পরিচর্যা, কমলা গাছের যত্ন, কমলা লেবু গাছের পরিচর্যা, টবে কমলা গাছের পরিচর্যা এবং কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য জানতে নিচের লিঙ্কগুলি পরীক্ষা করতে পারেন।
টবে কমলা গাছের পরিচর্যা-কমলা গাছের যত্ন
যদি আপনি টবে কমলা গাছ চাষ করতে চান, তাহলে অবশ্যই ভালোভাবে টবে কমলা গাছের পরিচর্যা করতে হবে। সেক্ষেত্রে আপনাকে কমপক্ষে ১.৫ থেকে ২ ফুট x ১.৫ থেকে২ ফুট সাইজের টপ বা ড্রাম ব্যবহার করতে হবে। এর থেকে ছোট আকৃতির টবে বা ড্রামে চায়না কমলার চাড়া রোপণ করা উচিত নয়। কমলা লেবু গাছের পরিচর্যা বা টবে কমলা গাছের পরিচর্যা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হবে।
মাটির প্রস্তুতির সময়ে একটি মিশ্রন সার তৈরি করতে হবে যা মধ্যে গোবর বা কম্পোস্ট, ইউরিয়া সার, টিএসপি, এমওপি সার, জিংক সালফেট এবং সলুবোর বোরন সার অন্তর্ভুক্ত থাকে। এর পরে সেই মিশ্রণ সার গুলো প্রত্যেকটি টবে নির্দিষ্ট পরিমাণে দিয়ে দিতে হবে।
পরে টবে নার্সারি থেকে ক্রয় করা ভালো মানের কমলা গাছের চারা লাগাতে হবে। টবে কমলা গাছের পরিচর্যা যদি সঠিকভাবে করতে পারেন তাহলে দেখবেন অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই কাজ গুলো কত সুন্দর ভাবে লেগে গেছে।
অল্প কয়েক বছরের মধ্যেই আপনি গাছগুলো থেকে ফল পাবেন। কমলা গাছের পরিচর্যা ,কমলা গাছের যত্ন, কমলা লেবু গাছের পরিচর্যা, টবে কমলা গাছের পরিচর্যা এবং কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার সম্পর্কে নিচে আরও বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হলো।
কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার
কমলা গাছের কিছু সাধারণ রোগ রয়েছে, যদিও এই রোগগুলির সম্পর্কে আপনি না জানেন তাহলে রোপণকৃত কমলা গাছ অকালেই মরে যেতে পারে। নিচে কমলা গাছের রোগ ও তার প্রতিকার সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার: পাতা খেকো পোকা
আপনার রোপণকৃত কমলা গাছে যদি পাতা খেতে পোকা বাসা বাধে তাহলে তা কমলা গাছের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে আপনাকে ১০ মিলি মেটাসিস্টক্স ১০ লিটার পানিতে অথবা ডায়াজিনন ৬০ ইসি প্রতি ১০ লিটার পানিতে ৪ চা চামচ মিশিয়ে স্প্রে করে গাছের পাতা ভিজিয়ে দিতে হবে। তাহলে এই রোগ দূরীভূত হবে।
কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার: বাকল ছিদ্রকারী পোকা
বাকাল ছিদ্রকারী পোকা কমলা গাছের বাকল গুলোকে ছিদ্র করে ফেলে এবং বাকলে রস পুরোপুরিভাবে শুষে নেয়। ধরনের সমস্যা দেখা দিলে রিপকর্ড ১০ ইসি কীটনাশক ১০ লিটার পানিতে ১০ মিলি বা ২ চা চামচ মিশিয়ে সারা গাছে স্প্রে করতে হবে।
কমলা গাছের রোগ ও প্রতিকার: গ্রীনিং রোগ
এ রোগ দেখা দিলে আপনার কমলা গাছের পাতা হলুদ আকার ধারণ করবে এবং আস্তে আস্তে শিরা দুর্বল হয়ে পড়বে। এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে, ম্যালাথিয়ন ০.০৪% অথবা সুমিথিয়ন ৫০ ইসি ১০ লিটার পানিতে ৫ চা চামচ মিশিয়ে পুরো গাছে স্প্রে করে দিতে হবে।
এই রোগগুলির সম্পর্কে সঠিকভাবে জানা থাকলে সহজেই কমলা গাছের চাষ করা সম্ভব।
উপসংহার
কমলা গাছের পরিচর্যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যাতে তা সুস্থ এবং উন্নত অবস্থায় থাকে।
কমলা গাছের জন্য সাবধানতা অবশ্যই পানির সর্বোত্তম প্রবাহক্রমের মধ্যে থাকতে হবে। অতিরিক্ত পানির সাপেক্ষে গাছের রেহাই করা যেতে পারে এবং সঙ্কটের সৃষ্টি হতে পারে।
কমলা গাছের জন্য ভালো মাটি প্রয়োজন যাতে গাছের নিকটস্থ রুট সিস্টেম ঠিকমতো পোষণ পাওয়ায়।
প্রতি মাসে পোষক সার দেওয়া উচিত, যেটি কমলা গাছের উন্নত উদ্ভিদ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
কমলা গাছের যত্নের জন্য বিশেষভাবে রক্ষা করতে হবে যারা কীট, রোগ, এবং জৈব আক্রমণ সম্পর্কে।
কমলা গাছ এর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় রক্তনদ স্তর অবশ্যই বজায় রাখতে হবে। এটি গাছের উন্নত ফলনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। নাইট্রোজেন, ফসফরাস, পটাশিয়াম ইত্যাদি পোষকাত্মক সার কমলা গাছের জন্য প্রয়োজন।
প্রতি মাসে গাছের অপ্রয়োজনীয় কাটা-বুলি পরিষ্কার করা উচিত। এটি গাছের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
গুরুত্বপূর্ণ হলেও, যেকোনো প্রয়াসের আগে স্থানীয় প্রাথমিকভাবে উপদেশ এবং তথ্য অনুসরণ করা জরুরি।
No comments:
Post a Comment