তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতা কি - M.A IT FIRM

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতা কি

 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতা কি

বাষ্পীয় শক্তির ব্যবহার দিয়ে প্রথম শিল্প বিপ্লবের শুরু হয়েছিল, বৈদ্যুতিক শক্তির ব্যাপক ব্যবহার ছিল দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লব। ইলেকট্রনিক্স এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার দিয়ে নতুন একটি শিল্প বিপ্লব শুরু হয়েছে। 

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতা কি

যে সমস্ত দেশ আগের শিল্প বিপ্লবের অংশ নিয়েছিল তারা পরবর্তীকালে পৃথিবীর নেতৃত্ব দিয়েছিল। একই ধারাবাহিকতায় আমরা বলতে পারি যারা এই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির শিল্প বিপ্লবে অংশ নেবে তারা ভবিষ্যতে পৃথিবীর নেতৃত্ব দেবে।

পোস্ট সূচীপত্র:তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতা কি

  • ভূমিকা
  • আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি কি
  • রোবটিক্স বলতে কি বুঝি
  • ক্রায়োসার্জারি কি
  • আইসিটি নির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা গুলো
  • উপসংহার

ভূমিকা

বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সকল দেশেই তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার অপরিহার্যভাবে বেড়ে চলছে। ভবিষ্যতেও প্রতিটি দেশ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে। উঠলো ও যোগাযোগ প্রযুক্তির এই বিকাশ পৃথিবীর সকল মানুষের জীবনকে কোনো না কোনোভাবেই স্পর্শ করছে। এই প্রযুক্তিটি মানুষের বুদ্ধিবৃত্তির উপরে অনেকখানি নির্ভর করে, কাজেই প্রথমবারের মতো এটি পৃথিবীর ধনী দরিদ্র, সম্পতশালী কিংবা সম্পদ হীন, অম্রসর অথবা অনগ্রসর র সকল জাতির জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করেছে। যে আপনি যতটুকু আগ্রাসী হয়ে এই প্রযুক্তিতে গ্রহণ করবে সেই জাতি তত লাভবান হবে। আসার কথা হচ্ছে সীমিত সমর্থের মধ্য থেকেও আমাদের দেশ ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে এই প্রযুক্তি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। 

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি কি

চিন্তা শক্তি, বুদ্ধি কিংবা বিশ্লেষণ ক্ষমতা মানুষের সহজাত, একটি যন্ত্রকে মানুষের মতো বুদ্ধিমত্তা দিয়ে এদিকে চিন্তা করানো কিংবা বিশ্লেষণ করানোর ক্ষমতা দেওয়ার পাখিকে সাধারণভাবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সি বলে। কিছুদিন আগেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল  ইন্টেলিজেন্স ছিল দূর ভবিষ্যতের একটি কাল্পনিক বিষয়। কিন্তু অতি সম্পত্তি এই দূরবর্তী ভবিষ্যতের বিষয়টি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হতে শুরু করেছে। তার প্রধান কারণ, পৃথিবীর মানুষ ডিজিটাল বিশ্বে এমনভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে যে, হঠাৎ করে অচিন্তনীয় পরিমাণ যেটা সৃষ্টি হয়েছে এবং সেই যেটাকে প্রক্রিয়া করার মতো ক্ষমতাশালী কম্পিউটার আমাদের হাতে চলে এসেছে।

আরো পড়ুন:কিভাবে প্রযুক্তি আমাদের জীবনে উন্নয়ন করছে-বিভিন্ন প্রযুক্তির বর্ণনা 

 এই যেটা বা তথ্যকে প্রক্রিয়া করার জন্য অনেক সময় সাধারণ কম্পিউটার প্রোগ্রাম যথেষ্ট নয়, এমন অ্যালগরিদম বা পদ্ধতি প্রয়োগ যার মাধ্যমে কম্পিউটার চিন্তা করে কোন সমাধান বের করতে পারে এবং পরবর্তীতে পরিস্থিতির সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে যেমন মানুষ বা অন্যান্য বুদ্ধিমান পানি করে থাকে। এই ধরনের পদ্ধতি এবং অ্যালগরিদম নিয়ে আর্টিফিশিয়ালইন্টেলিজেন্স কাজ করে থাকে। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর আওতায় বেশ কিছু ক্ষেত্র রয়েছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, মেশিন লার্নিং, রোবটিক্স,কম্পিউটার ভিশন, ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং, স্পিস প্রসেসিং ইত্যাদি। মেশিন লার্নিং এর কাজ হচ্ছে এমন ভাবে কম্পিউটার কে প্রশিক্ষণ দেওয়া যেন সে কোন সিস্টেম সম্পর্কে বিভিন্ন নিয়ম নিজেই শিখতে পারে এবং নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরেরটা কাজে লাগাতে পারে। রোবটিক্স হচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কাজে লাগে একটি রোবট বা যন্ত্রকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করানোর বিদ্যা।  

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাম্প্রতিক প্রবণতা কি


ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং দ্বারা মানুষ সচরাচর দেশে ভাষা ব্যবহার করে যেমন বাংলা, ইংরেজি, আরবি সে সকল ভাষায় কম্পিউটারের সাথে তথ্য আদান প্রদান করার ব্যবস্থা করা হয়। কম্পিউটার ভীষণ হচ্ছে ক্যামেরা দিয়ে একটি মেশিন যা দেখতে পায় তা থেকে বিভিন্ন তথ্য প্রক্রিয়া করার উপায় ঠিক যেমনটা মানুষ চোখ দিয়ে করে থাকে। আর স্পিস প্রসেসিং হচ্ছে মূলত কম্পিউটারকে গিয়ে কথা বলানো বা শোনানোর কৌশল।

রোবটিক্স বলতে কি বুঝি

রোবট শব্দের সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত, এই শব্দটি দিয়ে আমরা এমন এক ধরনের যন্ত্র কে বোঝাই যেটি মানুষের কর্মকান্ডের অনুরূপ কর্মকান্ড করতে পারে। বিজ্ঞান, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং প্রযুক্তির সমন্বয়ে গঠিত যে বিষয়টি রোবটের ধারণা, নকশা, উৎপাদন, কার্যক্রম কিংবা ব্যবহার বাস্তবায়ন করতে পারে রোবটিক্স বলা হয়। রোবট কথাটি বলা হলে যদিও সাধারণভাবে আমরা মানুষের আকৃতি যন্ত্র কল্পনা করি, কিন্তু প্রকৃত রোবট তার কাজের উপর নির্ভর করে যে কোন আকারে বা আকৃষ্টির হতে পারে আজ থেকে এক যুগ আগেও রোবটের মূল ব্যবহার গাড়ির কিংবা লাগানোর মাঝে সীমাবদ্ধ ছিল। প্রযুক্তির উন্নতির সাথে সাথে রোবটের কার্য পরিধি বেড়ে যেতে শুরু করেছে এবং এমন কোন কাজ নেই যেখানে রোবট ব্যবহার করা হচ্ছে না।

আরো পড়ুন: মানব জীবনের স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্ব

রোবট গঠনের তিনটি নির্দিষ্ট রয়েছে যথা-

  1. একটি রোবট যে নির্দিষ্ট কাজ করার জন্য তৈরি হয়, তার ওপর নির্ভর করে একটি বিশেষ যান্ত্রিক গঠন হয়ে থাকে
  2. রোবটের যান্ত্রিক কাজ করার জন্য বিদ্যুৎ ব্যবহারের ব্যবস্থা থাকতে হয়
  3. রোবটকে কম্পিউটার প্রোগ্রাম দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়

রোবট শিল্প এখনো তুলনামূলকভাবে নতুন হলেও এটি সাগরের গভীর থেকে শুরু করে মহাকাশ পর্যন্ত সব জায়গায়, যেখানে মানুষের পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয় সেখানে কাজ করে যাচ্ছে। রোবটকে যে সকল জায়গায় ব্যবহার করা হচ্ছে যথা-

বিপজ্জনক কাজে: মানুষের পক্ষে যেসব কাজ অত্যন্ত বিপদজনক এবং ঝুঁকিপূর্ণ, যেমন সমুদ্রের তলদেশে, যেকোনো অনুসন্ধানে কাজে, মাই মাইন ইত্যাদি বিস্ফোরক দ্রব্য নিষ্ক্রিয়করণ,  নিউক্লিয়ার শক্তি কেন্দ্রে, খনির অভ্যন্তরে এবং নদী বা সমুদ্রের নিচে টানেল নির্মাণ ইত্যাদি কার্যক্রমে রোবট ব্যবহৃত হচ্ছে।

শিল্পকারখানা:শিল্প উৎপাদন কাজে, শিল্প কারখানার ভারী বস্তু নড়াচড়া করানো, প্যাকিং, সংযোজন, পরিবহন ইত্যাদি সংসদ্য কাজ ছাড়াও কম্পিউটার এইডেড কাজে রোবটিক্স এর ব্যবহার।

চিকিৎসা ক্ষেত্রে: সার্জারি, জীবাণুম মুক্ত কর, ওষুধ বিতরণ ইত্যাদি কাজে রোবট ব্যবহৃত হয়।

সামরিক ক্ষেত্রে: বিস্ফোরক দ্রব্য শনাক্তকরণ, যুদ্ধক্ষেত্রে এবং অন্যান্য মিলিটারি অপারেশনের রোবট ব্যবহৃত হয়।

শিক্ষা ও বিনোদন: শারীরিকভাবে অসুস্থ, পঙ্গু বা অটিস্টিক শিক্ষার্থীদেরকে বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থায় রোবটের ব্যাপক ব্যবহার হয়েছে। শিশুদের চিত্তবিনোদন এর ক্ষেত্রে খেলনার উপর এবং মিডিয়া আর্টের ক্ষেত্রে রোবট ব্যবহৃত হয়।

নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণ: বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তার জন্য, অন্ধকারে কোন পর্যবেক্ষণ করার জন্য, দুষ্কৃতিকারী কিংবা জনক আসামিকে ধরা এবং পর্যবেক্ষণে পুলিশ কে রোবট সহায়তা দিয়ে থাকে।

মহাকাশ গবেষণায়: মহাকাশে কিংবা অন্য গ্রহ উপগ্রহ সম্পর্কিত তথ্য অনুসন্ধান ও বৈজ্ঞানিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য বা মহাকাশ যান প্রেরণ করার জন্য ব্যাপক হারে রোবটের ব্যবহার হয়েছে।

ক্রায়োসার্জারি কি

ক্রায়োসার্জারি কি


ক্রায়োসার্জারি  এক ধরনের কাটা ছেঁড়া বিহীন চিকিৎসা পদ্ধতি। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে অত্যাধিক শীতল তাপমাত্রার গ্যাস মানব শরীরে প্রয়োগ করে ও প্রত্যাশিত ও অসাভাবাক্রান্ত শিশু ত্বক কোষ ধ্বংস করার কৌশল হল ক্রায়োসার্জারি । মানব শরীরের তক ত্বক উপরিস্থত বিভিন্ন রোগ যেমন আঁচিল, ফুসকুড়ি, প্রদাহ ক্ষতিকর কত সহ ইত্যাদির ক্ষেত্রে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। বিশেষ করে শরীরের অভ্যন্তরস্থ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গসমূহ রোগ যেমন ক্যান্সার, ক্ষত প্রদাহ ইত্যাদিতে আক্রান্ত কোষগুলোর অবস্থান সিমুলেটেড সফটওয়্যার দ্বারা চিহ্নিত করে সীমানা নির্ধারণ করা হয়। 

আরো পড়ুন:খেজুরের গুড় তৈরি ও রক্ষণ প্রক্রিয়া কি

পরবর্তীতে আইসিটি যন্ত্রপাতি যেমন মাইক্রো ক্যামেরাযুক্ত নল প্রবেশ করিয়ে রোগাক্রান্ত কোষ অংশের ক্ষতস্থান সনাক্ত করে অত্যন্ত সূক্ষ্ম সুচযুক্ত নলের মাধ্যমে ক্রয়োজনিক বিভিন্ন গ্যাস আক্রান্ত স্থানে প্রয়োগ করা হয়। এখানে বিভিন্ন দেশের তাপমাত্রা ৪১ থেকে১৯৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে নামে আনা হয় রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। উল্লেখ্য থাকে যেন কোন ক্ষেত্রে এই  তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডে নামিয়ে আনা হয়। এতে করে ওই নিম্নতম তাপমাত্রা রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ সম্ভব না হওয়ায় রোগাক্রান্ত টিস্যু ক্ষতি সাধন হয়।ক্রায়োসার্জারি চিকিৎসায় রোগের আক্রান্ত স্থান ও রোগের ধারণা অনুযায়ী এবং নির্দিষ্ট শীতলতায় পৌঁছানোর জন্য তরল নাইট্রোজেন, আর্গন, অক্সিজেন, কার্বন ডাই অক্সাইড ইত্যাদিগ্যাস সরবরাহ করা হয়। এই তরল গ্যাস গুলো ক্রায়োজনি এজেন্টে নামে েপরিচিত। 

আইসিটি নির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা গুলো

ব্যবহারকারী বা মুক্তাদের ব্যবহার উত্তম আদর্শ প্রিয় পণ্য ও পরিষেবা তৈরি বা সরবরাহের পদ্ধতি কে বলে উৎপাদন। এই প্রক্রিয়া সৃজনশীলতা গবেষণা জ্ঞান মেধা ও মনোনীত ইত্যাদির সমন্বিত ব্যবহার বা কর্মের দ্বারা দৃশ্বমান হয়। একদিকে মানুষ প্রয়োজন একদিকে মানুষের প্রয়োজন ও পছন্দের বৈচিত্র উন্নতিকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মানুষকে নতুন নতুন পণ্যের প্রতি আকর্ষিত করার কারণ মানুষের নানা রকম চাহিদা সৃষ্টি হয়। সেই চাহিদা মেটাতে প্রতিনিয়ত পুণ্যের নতুন নতুন মডেল বাজারে আসছে।

আইসিটি নির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা গুলো


চাহিদা মোতাবেক পণ্য এর বৈচিত্র ও গুণগতমান নির্ধারণের জন্য পরিকল্পনা, পরিবহন, বিপণন, নকশা উন্নয়ন ইত্যাদির জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উপর নির্ভর করতে হয়। উৎপাদন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন যন্ত্রপাতির ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রোগ্রাম লজিক কন্ট্রোলার ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজকাল হাতের স্পর্শ ছাড়াই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত পদ্ধতিতে কলকারখানায় পণ্য উৎপাদন চলছে। যার কারণে সময়ের অপচয় রোধসহ কাঁচামাল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কমে গেছে।

উপসংহার

উপরোক্ত বিষয় হচ্ছে আমরা জানলাম তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কতটুকু প্রয়োজনীয়তা সমন্বয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির এই উন্নতি সাধনের কারণে আমাদের জীবনধারণ আরো সহজ এবং সমৃদ্ধশীল হয়ে। বিভিন্ন প্রকার প্রযুক্তি আমাদের জীবনে জড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন কার্যকলাপের মাধ্যমে। তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে আরো কিছু জানতে পরবর্তী পোস্টের অপেক্ষা করুন

No comments:

Post a Comment